অনলাইন ডেস্ক ৩১ জুলাই ২০২২, ০৯:৩৪
হিজরি বছরের প্রথম দিনে পরিবর্তন করা হলো পবিত্র কাবাঘরের গিলাফ। প্রতি বছর হজ মৌসুমে ৯ জিলহজ গিলাফ পরিবর্তনের ঐতিহ্য থাকলেও এবার তা রক্ষা করা হয়নি; বরং হিজরি নববর্ষকে স্মরণীয় করতে মহররমের প্রথম দিনে কাবার গায়ে নতুন গিলাফ পরানো হয়েছে।
শুক্রবার সূর্যাস্তের পরে সৌদি আরবে হিজরি নববর্ষের মহররম মাস শুরু হয়। তাই শুক্রবার রাতেই কাবাঘরে মোড়ানো হয় নতুন গিলাফ। বছরে একবার কাবাঘরে নতুন গিলাফ মোড়ানো একটি প্রাচীন ঐতিহ্য।
প্রতি বছরের নতুন গিলাফ তৈরির জন্য রয়েছে বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান। মক্কার উম্মুল জাওদে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির নাম ‘দ্য কিং আবদুল আজিজ কমপ্লেক্স ফর ম্যানুফ্যাকচারিং দ্য কাবা’স কিসওয়াহ’। এখানে কর্মরত ২০০ কর্মকর্তা কাবার গিলাফ পরিবর্তনের কাজটি সম্পন্ন করেন।
১৩৪১ মোতাবেক ১৯৬২ সালে সৌদির প্রতিষ্ঠাতা বাদশাহ আবদুল আজিজ বিন আবদুর রহমান আল সৌদ গিলাফ তৈরির একটি প্রতিষ্ঠান স্থাপনের নির্দেশ দেন। ১৩৯৭ মোতাবেক ১৯৯৭ সালে গিলাফ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানটি আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে। ২০১৭ সালে বাদশাহ সালমানের নির্দেশনায় এর নাম দেয়া হয় ‘দ্য কিং আবদুল আজিজ কমপ্লেক্স ফর ম্যানুফ্যাকচারিং দ্য কাবা’স কিসওয়া’। পবিত্র কাবাঘরের গিলাফ তৈরির প্রধান ক্যালিওগ্রাফার হিসেবে দুই দশক ধরে কাজ করছেন বাংলাদেশের শায়খ মুখতার আলম।
মূলত ৪৭ টুকরা কাপড় দিয়ে গিলাফ তৈরি করা হয়। ১৬ মিটার দৈর্ঘ্যরে বিশ্বের সর্ববৃহৎ সেলাই মেশিনে করা হয় এসব কাজ। কারুকার্যের অনেক কাজ হাতেও করা হয়। কাপড়ের ভিন্ন ভিন্ন পাঁচটি অংশ একত্রে সেলাই করা হয় এবং তামার রিং দিয়ে গোড়ায় স্থির করা হয়। ৬৭০ কেজি কাঁচা রেশম কালো রং করা হয়। ২১ ক্যারেটের ১২০ কেজি স্বর্ণ ও ১০০ কেজি রুপার সুতা দিয়ে সেই কাপড়ে লেখা হয় পবিত্র কুরআনের কারুকাজখচিত আয়াত। গিলাফের সব কাজ শেষ করতে ছয় থেকে আট মাস সময় লাগে। সব মিলিয়ে ৮৫০ কেজি ওজনের এই গিলাফ তৈরিতে ব্যয় হয় ২৫ মিলিয়ন সৌদি রিয়াল বা সাড়ে ছয় মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই গিলাফকে বিশ্বের ব্যয়বহুল কাপড় বলে মনে করা হয়।