অনলাইন ডেস্ক ২৯ আগস্ট ২০২২, ১৭:৪০
বাংলাদেশের আকাশে হিজরি ১৪৪৪ সনের পবিত্র সফর মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে আজ সোমবার (২৯ আগস্ট) থেকে পবিত্র সফর মাস গণনা করা হবে।হিজরি সনের দ্বিতীয় মাস ‘সফর’।
সফর আরবি শব্দ। এর অর্থ খালি বা শূন্য। মহররম মাসে যুদ্ধ বন্ধ থাকায় আরবরা এ মাসে দলে দলে যুদ্ধে যেত। ফলে তাদের ঘর খালি হয়ে যেত। আর আরবিতে ‘সফরুল মাকান’ বলতে এমন জায়গা বুঝায়, যা মানুষশূন্য। এ জন্য এ মাসের নামকরণ করা হয় ‘সফর’।এদিকে সোমবার থেকে পবিত্র সফর মাস শুরু হওয়ায় আগামী ২১ সেপ্টেম্বর (২৪ সফর ১৪৪৪ হিজরি) পবিত্র আখেরি চাহার শোম্বা পালিত হবে।
ইসলাম পূর্ব জাহেলি যুগে আরবে সফর মাস ঘিরে নানা কুসংস্কার প্রচলিত ছিল। এ মাসকে অশুভ মনে করা হতো। অথচ,আল্লাহর সৃষ্ট প্রতিটি দিন ও মাসই অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। কোনো সময় বা মাসের সঙ্গে মঙ্গল অমঙ্গলের সম্পর্ক নেই। ইসলামি বিশ্বাস অনুসারে,কল্যাণ-অকল্যাণ নির্ভর করে মানুষের বিশ্বাস ও কর্মের উপর।এ বিষয়ে রাসুল (সা.) বলেন, ‘রোগে সংক্রমিত হওয়া বলতে কিছুই নেই, কোনো কিছু অশুভ নয়। প্যাঁচার মধ্যে কুলক্ষণ নেই এবং সফর মাসেও কোনো অশুভ কিছু নেই…। ’ -(বুখারি, হাদিস : ৫৭৬৯)আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তারা বলল, তোমাদের কর্ম দোষের দুর্ভাগ্য তোমাদের সঙ্গেই আছে।’- (সূরা ইয়াসিন : আয়াত ১৯) অন্যত্র বলা হয়েছে, ‘প্রত্যেক ব্যক্তির কল্যাণ ও অকল্যাণের পরোয়ানা আমি তার গলায় ঝুলিয়ে দিয়েছি।-(সূরা বনী ইসরাঈল, ১৩)
তাই কোনও বিশেষ সময়ের সঙ্গে অমঙ্গল বা অকল্যাণের সম্পর্ক নেই।আল্লাহ তায়ালার রহমত ও বরকত পেতে হলে এ মাসেও বেশি বেশি ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নত ইবাদতের পাশাপাশি নফল ইবাদতে মশগুল থাকা উচিত।সবার উচিত আল্লাহর ওপর পূর্ণ বিশ্বাস রেখে নেক আমল করা। আর প্রতি চন্দ্রমাসে নির্দিষ্ট কিছু আমল থাকে। সে আমলগুলো সফর মাসে করা যেতে পারে। যেমন ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে আইয়ামে বীজের তিনটি রোজার প্রতি যত্নশীল হওয়া।প্রতি মাসে ৩টি রোজা পালনের কথা হাদিসে এসেছে। আব্দুল্লাহ ইবনে আ’মর ইবনে আ’স রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রতি মাসে তিনটি করে সিয়াম পালন, সারা বছর ধরে সিয়াম পালনের সমান।’ (বুখারীঃ ১১৫৯, ১৯৭৫)
তাছাড়া প্রতি সপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখার অভ্যাস করা। রাসুল (সা.) এ দুই দিন বিশেষ রোজা রাখতেন। এ বিষয়ে নবীজি (সা.) বলেন. বৃহস্পতি ও সোমবার আল্লাহ তায়ালার সামনে বান্দার আমল উপস্থাপন করা হয়, তাই আমি চাই- আমার আমল পেশ করার সময় আমি যেন রোজা অবস্থায় থাকি। -(সুনানে নাসায়ী, ২৩৫৮)
সর্বোপরি ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নতে মুয়াক্কাদা যথাযথ পালন করার সাথে সাথে নফল দান সদকার প্রতি মনোযোগী হওয়া। নতুন মাসে বরকতের চাঁদ দেখে দোয়া পাঠ করা।