২৪ অক্টোবর ২০২২, ৮ কার্তিক ১৪২৮, ২৭ রবিউল আওয়াল ১৪৪৪ হিজরি
ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী ও কনজারভেটিভ পার্টির নেতা হওয়ার দৌড়ে সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন। সুনাক জানিয়েছেন, তিনি দেশের ‘অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা’ ফিরিয়ে আনতে চান। মনোনয়নের সময় শেষের আগেই ক্ষমতাসীন দলের এমপিদের সমর্থনের দিক দিয়ে তিনি ইতোমধ্যে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন। সোমবার ব্রিটেনের স্থানীয় সময় বেলা ২টার মধ্যে মনোনয়নের সময় শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির (টোরি) ১৩০ জন এমপি ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সুনাককে চান বলে প্রকাশ্যেই জানিয়েছেন। সম্ভাব্য অন্য প্রার্থীদের মধ্যে শুধু ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউজ অব কমন্সের নেতা পেনি মর্ডান্ট নিজের প্রার্থিতার কথা নিশ্চিত করেছেন। ক্যারিবীয় অঞ্চলে ছুটিতে থাকা জনসন গত শনিবার তড়িঘড়ি করে দেশে ফিরে এলেও এখনো নিজের প্রার্থিতার ঘোষণা দেননি।
বেঁধে দেয়া নিয়ম অনুযায়ী, সোমবার দ্পুুরের মধ্যে একজন সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী প্রার্থীর প্রতি অন্তত ১০০ জন টোরি এমপি সমর্থন জানালে তিনি প্রার্থিতার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। হাউজ অব কমন্সে টোরি দলের এমপি সংখ্যা ৩৫৭ জন হওয়ায় শেষ পর্যন্ত মাত্র তিনজন এ বাধা পেরোতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে। শেষ খবর পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের প্রতি ৫৫ জন এমপি ও পেনি মর্ডান্ট ২৩ জনের সমর্থন পেয়েছেন।
বিরোধী লেবার দলীয় নেতা স্যার কিয়ার স্টারমার ফের সাধারণ নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক তাদের চলতি বিশৃঙ্খলাকেই গ্রহণ করতে হবে।’
সুনাক ও জনসন শনিবার রাতে এক বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন। তবে তাদের মধ্যে কী আলোচনা হয়েছে তাদের নির্বাচনী শিবির তা প্রকাশ করেনি। জনসন প্রতিদ্বন্দ্বিতার দৌড়ে এগিয়ে থাকা সুনাককে দলের নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন বলে জানা গেছে। জনসন কনজারভেটিভ এমপিদের সামনে গুরুত্বপূর্ণ এক চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকা পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে একমাত্র তিনিই দলকে পরাজয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে পারবেন বলে দাবি করেছেন।
২০১৯ সালে ব্রিটেনের সর্বশেষ সাধারণ নির্বাচনে জনসনের নেতৃত্বেই বড় ধরনের জয় পেয়েছিল কনজারভেটিভ পার্টি, তাই দলের সদস্য ও এমপিদের একটি অংশের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা অক্ষুণœ আছে; তারা তাকে ‘জাতীয় নির্বাচনের বৈতরণী পার হওয়ার ক্ষেত্রে তুরুপের তাস’ মনে করে।
মাত্র ছয় সপ্তাহ আগে কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বের দৌড়ে ঋষি সুনাককে হারিয়ে লিজ ট্রাস ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জনসনের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন। তখন ধারাবাহিক কয়েকটি কেলেঙ্কারির ঘটনার পর জনসন চাপের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিলেন।
কিন্তু তার বদলে ক্ষমতায় আসা লিজ ট্রাস দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও কর হ্রাস করার উদ্যোগ নিয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর ব্রিটিশ ইতিহাসের সবচেয়ে ক্ষণস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের ৪৫ দিন পর পদত্যাগ করেন। এখন লিজ ট্রাস কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সম্ভবত আরো এক সপ্তাহ দায়িত্বপালন করবেন। শুক্রবারের মধ্যে কনজারভেটিভ পার্টির নতুন নেতা ও নতুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কে হচ্ছেন তা জানা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্রঃবিবিসি