বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ফাইল ছবি

প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) মতো আরও যাঁরা দেশের কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছেন, তাঁদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ রোববার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ দাবি জানান। দেশের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে আলোচিত

পি কে হালদার গ্রেপ্তার হওয়ায় সন্তোষ জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘পি কে হালদারকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটা ভালো কথা। আমরা খুবই…যিনি টাকা পাচার করেছেন তাঁকে ধরা হয়েছে। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন, এ রকম কয়জন হালদার আছে?’
বাংলাদেশের আর্থিক খাত থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়ে প্রায় তিন বছর পলাতক ছিলেন এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পি কে হালদার। গতকাল শনিবার পশ্চিমবঙ্গ থেকে পাঁচ সহযোগীসহ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।

পি কে হালদারের মতো সরকারঘনিষ্ঠ আরও অনেকে বিদেশে টাকা পাচার করছেন বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাম্প্রতিক এক বক্তব্যেও বিষয়টি উঠে এসেছে বলে দাবি করেন তিনি।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ফরিদপুরে ওনাদের একটা সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজেই বলেছেন যে হাজার হাজার কোটি টাকা যারা পাচার করেছে তাদেরকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেওয়া হবে না। তার মানে তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন, আওয়ামী লীগের লোকেরা হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। আমরা জানতে চাই, এ ধরনের হাজার হাজার কোটি টাকা কত পাচার হয়েছে? এক দিনে তো পাচার হয়নি। কীভাবে, কোন পদ্ধতিতে পাচার হলো? কারা তার সঙ্গে জড়িত? এগুলো পরিষ্কার করে জাতির সামনে তুলে ধরা হোক।’

মির্জা ফখরুল বলেন, এই যে চুরি হচ্ছে, দুর্নীতি হচ্ছে, এই যে ডাকাতি করে অর্থ পাচার করা হচ্ছে, অবশ্যই তদন্ত করে জনগণের সামনে প্রকাশ করতে হবে। সুযোগ পেয়েই বিএনপির লোকেদের খুঁজে তাদের হয়রানি করা, আর কিছু চুনোপুঁটিকে ধরে হয়রানি করা। এ ধরনের বড় বড় যাঁরা সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত, সুষ্ঠু তদন্ত করে তাঁদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের বুদ্ধপূর্ণিমার শুভেচ্ছা জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বৌদ্ধধর্ম অহিংসা ও শান্তির কথা বলে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আজকে দেশে তা সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। আজকে শান্তির বদলে এখানে অশান্তি। যারা সংখ্যায় কম; বিভিন্ন ধর্মের, সম্প্রদায়ের মানুষ আছেন তাঁদের ওপর অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন বেড়ে গেছে। এটা আর কখনো এত বাড়েনি। এর মূল কারণ হচ্ছে, এখন যারা জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে তাদের জবাবদিহি করতে হয় না।

তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। তাদের একটাই লক্ষ্য, জোর করে ক্ষমতা দখল করে তারা একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

গণতন্ত্র ‘পুনরুদ্ধারে’ দেশের সব ধর্ম, মত ও রাজনৈতিক দলের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির মহাসচিব।

বিএনপির সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক দীপেন দেওয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে লন্ডন থেকে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সুকোমল বড়ুয়া, বিএনপি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম।

এর আগে দুপুরে বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জেরেমি ব্রুআর-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় তাঁর সঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *