অনলাইন ডেস্ক ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২০:৪৩
আজ ১লা সেপ্টেম্বর থেকে নগরীর দোকানপাট বিশেষ করে ওষুধের দোকান বন্ধের ব্যাপারে বিভিন্ন মাধ্যমে সমালোচনা হলেও এ ব্যাপারে এখনো অনড় রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। গতকাল মঙ্গলবার নগর ভবনে অনুষ্ঠিত করপোরেশন সভায় এ ব্যাপারে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন,হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট ওষুধের দোকান ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার বিষয়ে বিচ্ছিন্নভাবে নানা মাধ্যমে আলোচনা হলেও করপোরেশন এখনো কোনো পক্ষ বা ব্যক্তি হতে কোনো আবেদন পায়নি,বরং ঘোষিত গণবিজ্ঞপ্তির সময়সূচি ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। শুধু হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট ওষুধের দোকানগুলো খোলা রাখার বিষয়ে বিভিন্নভাবে বলা হচ্ছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট অংশীজন যারা আছেন,তারা কিন্তু আমাদের কাছে লিখিত কোনো আবেদন করেননি।
পর্যাপ্ত চিকিৎসক নিশ্চিত না করে ২৪ ঘণ্টা ওষুধের দোকান খোলা রাখার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন রেখে মেয়র বলেন, হাসপাতালের সাথে সংযুক্ত ওষুধের দোকান ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার যৌক্তিকতা আমরা দেখি না। কারণ যেখানে রোববার থেকে বৃহস্পতিবার সুনির্দিষ্ট সময়ের পর, শুক্র-শনিবার এবং রাতে চিকিৎসকই পাওয়া যায় না, সেখানে ওষুধের দোকান কেন খোলা রাখা হবে? আগে তো চিকিৎসক নিশ্চিত করতে হবে। তারপরই তো চিকিৎসাসেবার জন্য ওষুধের দোকান খোলা রাখতে হবে। তারপরও কোনো হাসপাতাল থেকে যদি লিখিত আবেদন আসে,আমরা অবশ্যই সেটা বিবেচনা করব।
গত ২২ আগস্ট ডিএসসিসি এক গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে। এতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্ধের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। বলা হয়- সব দোকানপাট, শপিংমল, মার্কেট, বিপণিবিতান, কাঁচাবাজার, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা রাত ৮টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে। একইভাবে সব ধরনের রেস্তোরাঁ, খাবারের দোকান ও দোকানের রান্নাঘর রাত ১০টা এবং খাবার সরবরাহ রাত ১১টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে। অন্য দিকে চলচ্চিত্র প্রেক্ষাগৃহসহ বিনোদনমূলক স্থাপনা, প্রতিষ্ঠানগুলো রাত ১১টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে। এ ছাড়া সাধারণ ওষুধের দোকান রাত ১২টায় এবং হাসপাতালের সাথে সংযুক্ত নিজস্ব ওষুধের দোকান রাত ২টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে।
ডিএসসিসি ঘোষিত সময়সূচির বাইরে যেকোনো ধরনের প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে লিখিত আবেদনে যথাযথ যৌক্তিকতা সহকারে করপোরেশনের কাছ থেকে পূর্বানুমতি গ্রহণ করতে হবে জানিয়ে গতকালের সভায় মেয়র বলেন, আমরা ঢাকা শহরের সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে একটি সময়সূচি উপস্থাপন করেছি এবং ১ সেপ্টেম্বর থেকে এটা কার্যকর করতে চাই। তিনি বলেন, ঢাকা শহরকে একটি সুনির্দিষ্ট সময়সূচির মধ্যে আনতেই হবে। ঘোষিত সময়সূচি বাস্তবায়নে কাউন্সিলরদের নির্দেশনা প্রদান করে ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, আপনারা অবশ্যই এ সময়সূচি নিশ্চিত করবেন। এলাকা, পাড়া-মহল্লায় যাতে সবাই সূচি মেনে কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করে, সেটি নিশ্চিত করবেন। এর ব্যত্যয় হলে আমরা আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেবো। সে লক্ষ্যে আপনাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছি।
সময়সূচির সাথে করপোরেশনের আনুষঙ্গিক কার্যক্রম ও শহরের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ওতপ্রোতভাবে জড়িত উল্লেখ করে মেয়র বলেন, শুধু অবকাঠামো উন্নয়নেই একটি শহরকে পরিচালনা করা যায় না। তার সাথে আনুষঙ্গিক যত বিষয় রয়েছে- সেগুলোরও সংযোগ রয়েছে। সুনির্দিষ্ট সময়সূচির সাথে আমাদের বিভিন্ন কার্যক্রমের ব্যবস্থাপনা জড়িত। যখন সব কিছু একটি সূচির আওতায় আসবে তখন আমরা কার্যক্রমগুলো আরো সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করতে পারব। ঢাকাবাসীকে ফলপ্রসূ ও কার্যকর সেবা প্রদানের পাশাপাশি একটি উন্নত ঢাকা উপহার দিতে পারব।