www.yoursolution.com | প্রকাশের সময় : ৮ জুন, ২০২২, ৮:৩৮ পিএম | আপডেট : ৯:৩০ পিএম, ৮ জুন, ২০২২
হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির জ্যেষ্ঠ দুই নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে মুসলিম বিশ্বের ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ ও তোপের মুখে পড়েছে দেশটি। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রশ্নের মুখে পড়েছে বিজেপির তথা নরেন্দ্র মোদির সরকারের ভাবমূর্তি। -এনডিটিভি
টিভি বিতর্কে অংশ নিতে পারবেন। আর মুখপাত্র ও প্যানেলিস্টদের টিভি বিতর্কে অংশ নেওয়ার দায়িত্ব বা অনুমোদন দেবে ভারতের ক্ষমতাসীন এই দলটির মিডিয়া সেল। একইসঙ্গে টিভি বিতর্কে অংশ নিয়ে বা অন্য কোথাও বক্তব্য দেওয়ার সময় কোনো ধর্ম, তার প্রতীক বা ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের সমালোচনা করার বিরুদ্ধে মুখপাত্রদের সতর্ক করা হয়েছে বলেও এনডিটিভিকে জানিয়েছে বিজেপির ওই সূত্র। কোনো আলোচনা উত্তপ্ত অবস্থায় গেলেও সেখানে সীমা লঙ্ঘন না করতে বিজেপি প্যানেলিস্টদের বলা হয়েছে। নিজেদের ভাষা সংযত রাখতে এবং উত্তেজিত না হওয়ার জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দলটির এক সূত্র।
বিজেপি আরও জানিয়েছে, কোনো উসকানিতেই দলের আদর্শ বা নীতি লঙ্ঘন করতে পারবেন না দলের মুখপাত্র ও প্যানেলিস্টরা। এছাড়া বিজেপি তার মুখপাত্রদের কোনো টিভি চ্যানেলে উপস্থিত হওয়ার আগে প্রথমে আলোচনার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে, এর জন্য প্রস্তুতি নিতে এবং এতে দলীয় স্বার্থ বা বক্তব্য খুঁজে বের সেই অনুযায়ী কথা বলতেও নির্দেশনা দিয়েছে।বিজেপির এক সূত্র জানিয়েছে, (বক্তব্য দেওয়ার সময়) দলের মুখপাত্র এবং প্যানেলিস্টদের নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপরেই থাকা উচিত। তারা যেন ‘কোনো ফাঁদে’ না পড়েন।
এছাড়া বিজেপিও চাচ্ছে, দলের মুখপাত্ররা মোদি সরকারের সামাজিক কল্যাণমূলক কাজ ও সেগুলো তুলে ধরার ওপরেই মনোনিবেশ করুক। ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সাবেক মুখপাত্র নুপুর শর্মা এক টেলিভিশন শোতে অংশ নিয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে বিতর্কিত ওই মন্তব্য করেছিলেন। পরে দলটির নয়াদিল্লি শাখার গণমাধ্যম প্রধান নবীন জিন্দালও নুপুর শর্মার মন্তব্যের সমর্থনে টুইট করেন।
তাদের এই মন্তব্য দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়কে ক্ষুব্ধ করে তোলে। এমনকি অভিযুক্তদের মন্তব্যের জেরে ভারতের কয়েকটি রাজ্যের মুসলিমরা বিক্ষিপ্তভাবে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেন। আর এর রেশ ভারতের গণ্ডি ছাড়িয়ে বাইরের বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। অবশ্য এরপরই অনেকটা নড়েচড়ে বসে বিজেপি। পরিস্থিতি বিবেচনায় বিজেপি অভিযুক্ত নুপুর শর্মাকে বরখাস্ত এবং জিন্দালকে বহিষ্কার করা করে। পরে বিজেপির এই দুই নেতা প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে বিবৃতিও দিয়েছেন। মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে এনডিটিভি বলছে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে বিজেপি নেতা নুপুর শর্মা এবং নবীন কুমার জিন্দালের কটূক্তির জেরে কূটনৈতিক ক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। যদিও ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার বিভিন্ন দেশে এসব ক্ষোভ প্রশমিত করার চেষ্টা করেই চলেছে। নয়াদিল্লির দাবি, ভারত ও ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার সকল ধর্মকেই সম্মান করে।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য ঘিরে ইরান, ইরাক, কুয়েত, কাতার, সউদি আরব, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান, আফগানিস্তান, বাহরাইন, মালদ্বীপ, লিবিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া সহ অন্তত ১৫টি দেশ ভারতের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে। একইসঙ্গে এই দেশগুলো নিন্দা জানানোর পাশাপাশি মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অপমান প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ভারত সরকারকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছে।