ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (আইবিবিএল) থেকে এস আলম গ্রুপ ও ভুয়া ঠিকানা ও কাগুজে কোম্পানির নাম ব্যবহার করে চারটি প্রতিষ্ঠানের নামে ৩৪ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা ঋণের ঘটনায় অর্থ পাচার হয়েছে কি না, সে বিষয়ে দুদক ও বিএফআইইউ’র তদন্ত চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনিরসহ পাঁচজন এ আবেদন করেন। এ সময় তিনটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন আবেদনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়।
অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির গণমাধ্যমকে বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রধান কর্মকর্তার কাছে এ আবেদন করা হয়েছে।
আবেদনকারী বাকি চারজন হলেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুল্লা সাদিক, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আবদুল ওয়াদুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী যায়েদ বিন আমজাদ ও অন্য শিক্ষার্থী শায়খুল ইসলাম ইমরান।
আবেদনে বলা হয়, আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারীগণ ইসলামী ব্যাংকের নিয়মিত গ্রাহক। ব্যাংকটির বিভিন্ন শাখায় আমাদের অ্যাকাউন্ট আছে। আমরা সেখানে লেনদেন করে থাকি। সূত্রে উল্লিখিত পত্রিকার রিপোর্টে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ম বহির্ভূত লেনদেন প্রতিভাত হয়েছে। জামানত ছাড়া ঋণ প্রদান, নামসর্বস্ব কোম্পানিকে ঋণ প্রদানের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উঠে এসেছে ব্যাংকটির বিরুদ্ধে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, উল্লিখিত সংখ্যার চেয়ে প্রকৃত অসাধু লেনদেনের পরিমাণ অনেক বেশি।এ ধরনের অসাধু লেনদেন আর্থিক ব্যবস্থাপনায় অধিকতর অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। এতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের গ্রাহকসহ জনগণ ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ নভেম্বর দৈনিক প্রথম আলোতে ইসলামী ব্যাংকে ‘ভয়ঙ্কর নভেম্বর’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, নাবিল গ্রেইন ক্রপস লিমিটেডের ভুয়া ঠিকানা ও নাবিল গ্রুপের অফিসের ঠিকানা ব্যবহার করে মার্টস বিজনেস লিমিটেড নামে কাগুজে কোম্পানির নামে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (আইবিবিএল) থেকে দুই হাজার কোটি টাকা তুলেছে অসাধু চক্র।
NEWAGE-এর রিপোর্ট অনুয়ায়ী, এস আলম গ্রুপ একাই ত্রিশ হাজার কোটি টাকা।চলতি বছর ইসলামী ব্যাংক থেকে আটটি প্রতিষ্ঠানের নামে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা তোলা হয়েছে। তবে ১ থেকে ১৭ নভেম্বরের মধ্যে ২ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা তুলে নেওয়ায় মাসটিকে ‘ভয়ংকর নভেম্বর’ বলছেন ব্যাংকটির কর্মকর্তারা।বুধবার এস আলম গ্রুপের ত্রিশ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হলে আইনজীবী শিশির মনিরকে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলো সংযুক্ত করে রিট আবেদন করতে বলেন হাইকোর্ট।