অনলাইন ডেস্ক ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৭:১৭
ভারতের উত্তরপ্রদেশের একটি সরকারি হাসপাতালে ওয়ার্ডের বাইরে নামাজ পড়ার কারণে পুলিশি তদন্তের মুখোমুখি হয়েছেন এক তরুণী। নামাজ আদায়ে ওই তরুণীর নেতিবাচক কোনো উদ্দেশ্য ছিল কিনা- তা জানতেই পুলিশের এই তদন্ত। তবে নামাজকে কেন্দ্র করে এলাহাবাদের পুলিশের এই তৎপরতা পছন্দ হয়নি সাধারণ মানুষের। তাই পুলিশের ব্যাপক সমালোচনা করছেন তারা।
রোববার প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার আরবি ভার্সনে এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া তরুণীটির নামাজ পড়ার সংক্ষিপ্ত একটি ভিডিও ও ভারতীয় পুলিশের সমালোচনার বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে।
সূত্র জানায়, ওই তরুণী হাসপাতালটির ডেঙ্গু ওয়ার্ডের একজন রোগীর স্বজন। নামাজের সময় হলে তিনি ওয়ার্ডের বাইরে খালি একটি জায়গায় নামাজ পড়ছিলেন। সেটিই অজ্ঞাত কেউ ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
শুধুমাত্র নামাজ পড়াকে কেন্দ্র করে কেন এই হয়রানি, সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভারতের পার্লামেন্ট সদস্য ও প্রভাবশালী মুসলিম নেতা আসাদুজ্জান ওআইসি। তিনি বলেছেন, ‘রোগির সাথে হাসপাতালে স্বজনদের যেতেই হয়। এদের কেউ যদি কাউকে কষ্ট না দিয়ে খালি জায়গায় নামাজ পড়েন, তাহলে তাতে কী সমস্যা? উত্তর প্রদেশের পুলিশের কি করার মতো আর কোনো কাজ নেই? আমরা কি এখন ইবাদতকারীদেরও নথী সংগ্রহে লেগে পড়লাম?’
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফারুক গ্রোভার নামে এক ভারতীয় লেখক। তিনি লিখেছেন, ‘এখন আল্লাহর নাম নেয়াও অপরাধ, তাও হাসপাতালে। যদি পুলিশ এরকম আচরণ সব ধর্মের মানুষের সাথেই করে, তাহলে তো হাসপাতালের নাম বদল করে “কারাগার” রাখা দরকার।’
ঋতুপর্ণা নামের এক সাংবাদিক ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘স্বজনের সুস্থতার জন্য নামাজ আদায়কারী তরুণীর ভিডিওটি যে করল, তাকে আটক করা হোক।’
এই ঘটনায় ভারতীয় একটি পত্রিকা পুলিশকে কটাক্ষ করে লিখেছে, ‘পুলিশ কি দিন দিন নির্বোধ হচ্ছে? এখানে অপরাধটা কী? এ বিষয়ে তদন্তের নামে জলঘোলা করা ও সময় নষ্ট করা কেন?
আলজাজিরার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ভারতে ইদানিং মুসলিমদের ওপর দমন-পীড়ন খুব বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কয়েক মাসে যা নানা রূপ ধারণ করেছে।’
তবে খুশির খবর হলো- এলাহাবাদ পুলিশ টুইটারে জানিয়েছে, ‘ভিডিওতে প্রকাশিত তরুণী নামাজ আদায় করে কোনো অপরাধ করেননি। এজন্য তার বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো তদন্ত থেকে সরে এসেছে উত্তর প্রদেশ পুলিশ।’
সূত্র : আলজাজিরা