অনলাইন ডেস্ক ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২০:৪০
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের যে হুমকি দিয়েছেন তা ‘ধাপ্পা’ বলে উড়িয়ে না দিয়ে গুরুত্বের সাথে নেয়া উচিত।বিবিসির সংবাদদাতা লিস ডুসেটকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, রুশ নেতা ও রুশ সেনাবাহিনী কোণঠাসা হয়ে পড়ার পর ইউক্রেনের যুদ্ধ একটা ‘বিপজ্জনক মুহূর্তে’ পৌঁছেছে।
ইউক্রেন বাহিনীর পাল্টা আক্রমণের মুখে রণাঙ্গনে রুশ বাহিনী কিছুটা বিপর্যস্ত অবস্থায় আছে।
‘রুশ সৈন্যরা কোণঠাসা হয়ে পড়ায় অবশ্যই পরিস্থিতি বিপজ্জনক দিকে মোড় নিয়েছে এবং এর প্রতিক্রিয়ায় পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের যে হুমকি দিয়েছেন তা খুবই খারাপ,’ বলছেন বোরেল।
যুদ্ধের সাত মাসের মাথায় প্রেসিডেন্ট পুতিনের সৈন্যরা কোণঠাসা হয়ে পড়লেও বোরেল বলছেন, সমস্যার একটা ‘কূটনৈতিক সমাধান’ এখন জরুরি। তিনি বলেন, এমন একটা সমাধান যেটা ‘ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে’, নাহলে ‘যুদ্ধ হয়তো থামবে, কিন্তু শান্তি আসবে না এবং আবার যুদ্ধ বাঁধার হুমকি থেকে যাবে।’
কী বলেছেন পুতিন
এ সপ্তাহের গোড়ার দিকে জাতির উদ্দেশে দেয়া এক বিরল ভাষণে পুতিন বলেন, ‘তার দেশের হাতে বিধ্বংসী নানা ধরনের মারণাস্ত্র’ রয়েছে এবং ‘আমাদের হাতে যেসব অস্ত্রসম্ভার রয়েছে তার সবই আমরা ব্যবহার করব।’ তিনি আরো বলেছেন, ‘আমি ধাপ্পা দিচ্ছি না।’
‘কেউ যদি বলে আমার কথাটা ধাপ্পা নয়, তখন সেটা গুরুত্বের সাথে নেয়া উচিত,’ বলেন বোরেল।
ওই ভাষণে পুতিন ইউক্রেনের যুদ্ধ করার জন্য রিজার্ভ সৈন্য তলবেরও ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, তিন লাখ রুশ যারা বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছে তাদের তলব করা হবে।
তার এই ঘোষণার পর রাশিয়ায় প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে এবং রণাঙ্গনে যাওয়া এড়াতে দলে দলে রাশিয়ানরা দেশ ছেড়ে পালাতে শুরু করে।
ইউক্রেন পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে রুশ সৈন্যদের হাত থেকে আট হাজার বর্গ কিলোমিটারের বেশি এলাকা পুনর্দখল করেছে বলে ঘোষণা দেবার পর পুতিন এই ভাষণ দিলেন।
গণভোট
ইউক্রেনের রুশ অধিকৃত চারটি অঞ্চলে রাশিয়া এখন স্ব-উদ্যোগে গণভোট নিচ্ছে।
এসব অঞ্চলের রুশ সমর্থনপুষ্ট কর্তৃপক্ষ ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে গণভোট শুরু করেছে এই অঞ্চলগুলোর রুশ ফেডারেশনে যোগ দেয়ার প্রশ্নে।
সশস্ত্র রুশ সৈন্যরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট সংগ্রহ করছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ বাড়িতে গিয়ে ভোট নেয়া হচ্ছে।
ইউক্রেন বলছে, প্রেসিডেন্ট পুতিনের সমর্থনে আয়োজন করা এই গণভোটের কোনো আইনি ভিত্তি নেই।
দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসনে আয়োজন করা এই গণভোটকে পশ্চিমা দেশগুলোও অবৈধ বলে বর্ণনা করেছে। ইউক্রেনের এসব অঞ্চলকে যাতে রাশিয়ার সীমানাভুক্ত করা যায়, সেই লক্ষ্যেই এই গণভোট বলে বলছে ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ।
গণভোট হবে পাঁচ দিন ধরে, যদিও ইউক্রেনের পূর্বে এবং দক্ষিণে এই চারটি অঞ্চল ঘিরেই যুদ্ধ অব্যাহত আছে।
রাশিয়া যদি এই অঞ্চলগুলো তাদের দেশের অন্তর্ভুক্ত করতে পারে, তখন তারা বলতে পারবে যে, ইউক্রেনকে দেয়া পশ্চিমা দেশগুলোর অস্ত্র দিয়ে তাদের দেশে আক্রমণ চালানো হচ্ছে। এতে করে যুদ্ধ আরো তীব্র হয়ে উঠতে পারে।
সূত্র : বিবিসি