আজকের এই টিউনে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের জন্য সবচাইতে আশ্চর্য জনক কিছু অ্যাপ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যেগুলো প্রতিদিন ডিভাইসে ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনার ডিভাইসের সাধারণ অবস্থার পরিবর্তন করতে পারেন।
গুগল প্লে স্টোরে এমন অনেক অ্যাপ রয়েছে, যা আসক্তিকর গেম থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সব অ্যাপ। যেসব অ্যাপ গুলোর মধ্যে থেকে কিছু অ্যাপস আপনার জন্য তেমন সুবিধা এনে দিতে না পারলেও কিছু কিছু অ্যাপ রয়েছে, যেগুলো আপনার ফোনকে কাস্টমাইজ করার এক দুর্দান্ত উপায় হতে পারে। যে সব অ্যাপগুলো ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি স্মার্ট-ফোন ব্যবহার করার অভিজ্ঞতা কে অনেকটা পাল্টে দিতে পারেন।
গুগল প্লে স্টোরে এমন আরও অনেক অ্যাপ রয়েছে যেগুলো আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করার পদ্ধতি সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তন করতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় যে, আপনি যে ব্রান্ডের ফোন ব্যবহার করেন বা যে ফোনটি ব্যবহার করেন, সেই ফোনে তেমন কোনো ফিচার থাকে না। এক্ষেত্রে আপনি আপনার ফোনের নতুন নতুন ফিচার যোগ করার জন্য গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে অ্যাপ খুঁজে থাকেন। যেসব অ্যাপগুলোর মধ্য থেকে কিছু অ্যাপ রয়েছে যেগুলো আপনার ফোনের ইন্টারফেস কে আরও কিছুটা উন্নত করে, আপনার ফোনের সাধারণ কাজ গুলোকে আরো কিছুটা স্বয়ংক্রিয় করে তোলে এবং এতে করে আপনার ব্যবহৃত অপারেটিং সিস্টেমকে আরো বেশি উন্নত করে তোলে। এভাবে করে কোন একটি ফিচার আপনার ফোনে না থাকলেও আপনি গুগল প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করে আলাদাভাবে আপনার ব্যবহৃত অপারেটিং সিস্টেমে ফিচার যোগ করে নিতে পারেন।
চলুন তবে আজকের এই টিউনে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের জন্য কিছু আশ্চর্যজনক অ্যাপ দেখে নেয়া যাক।
১. লিনকেট ব্রাউজার (Lynket Browser)
মনে করুন, আপনি কোন তথ্য খোঁজার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া অথবা ইন্টারনেটে খোঁজ করছেন। এক্ষেত্রে সে সময় আপনাকে অবশ্যই ব্রাউজারে অনেকগুলো ট্যাব ওপেন করতে হতে পারে। অথবা অন্য কোনো কারণে হয়তোবা ব্রাউজারে গিয়ে আপনাকে অনেকগুলো ট্যাব ওপেন রেখে কোন কিছু খুঁজতে হতে পারে। আপনি যদি কম্পিউটার ব্যবহার না করে থাকেন, তবে মোবাইলে ইন্টারনেটের অনেকগুলো কাজ একসঙ্গে করার জন্য অবশ্যই আপনাকে ব্রাউজারের অনেকগুলা ট্যাব চালু রাখতে হবে। আর এক্ষেত্রে একটি ট্যাব থেকে অন্য একটি ট্যাব ওপেন করার মাধ্যমে আপনি কাজটি খুব সহজেই করতে পারবেন।
লিনকেট ব্রাউজারের মাধ্যমে আপনি এমনি কাজ করতে পারবেন, তবে এটি একটু ভিন্নভাবে। যদিও গুগল ক্রোম এবং অন্যান্য সকল ব্রাউজার দিয়ে একাধিক ট্যাব ওপেন করে সেগুলো দিয়ে কাজ করা যায়। লিনকেট ব্রাউজারের মাধ্যমে আপনি ব্যাকগ্রাউন্ডে অনেকগুলো ওয়েব পেজ খুলতে পারেন এবং এগুলোকে চাইলে ভাসমান অবস্থায় আপনার মোবাইলের স্ক্রিনের উপর রাখতে পারেন। আপনি মেসেঞ্জার থেকে যখন কারো সঙ্গে চ্যাটিং করেন এবং চ্যাটিং করতে করতে মেসেঞ্জার থেকে বেরিয়ে আসেন, তখন আপনি নিশ্চয় ডিসপ্লের উপর সেই ব্যক্তির ছোট্ট একটি প্রোফাইল আইকন দেখতে পান Chat head আকারে এবং সেখানে ক্লিক করার মাধ্যমে মেসেঞ্জারে না গিয়েও আপনি চ্যাটিং করতে পারেন।
এক্ষেত্রে আপনি কোন একটি কাজ করতে করতে সেসব একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে Chat head-এ ক্লিক করে কথোপকথন চালিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু আপনি যদি এই কাজটি করতে পারেন একটি ব্রাউজারে এবং এখানে ব্যক্তির পরিবর্তে যদি সেগুলো হয় বিভিন্ন ওয়েবসাইট, তাহলে ব্যাপারটা কেমন হয়? নিশ্চয় এক্ষেত্রে ব্যাপারটি আপনার কাছে অনেক বেশি আকর্ষণীয় হবে। আর এই কাজটি আপনি করতে পারছেন লিনকেট ব্রাউজারের এর মাধ্যমে।
এই অ্যাপটি আপনার মোবাইলের থাকা বিদ্যমান ব্রাউজার এর সাথে কাজ করে এবং আপনি যখন যে লিংকটিতে ক্লিক করেন তখন সেই পেজটিতে অনেক দ্রুত গতিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লোড। এক্ষেত্রে এই ব্রাউজারে আপনার লিংকটি ওপেন করার জন্য AMP বা Accelerated Mobile Page সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। এই ব্রাউজারের এমন ব্যবস্থাটি আপনি ফেসবুকের ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল ফিচারে ও দেখতে পান। যেখানে ইনস্ট্যান্ট আর্টিকেল এর কোন একটি লিঙ্ক এ ক্লিক করলে, সেই লিংকটি অনেক দ্রুত গতিতে ওপেন হয়।
লিনকেট ব্রাউজারের সবচাইতে বড় বৈশিষ্ট্য হলো যে, এটিতে কোন একটি ওয়েব পেজকে আর্টিকেল মোডে পড়া যায়। যার ফলে কোন একটি আর্টিকেল অনেক সুন্দরভাবে রিডার মোডে লোড হয়।
Lynket Browser
Official Download @ Lynket Browser
২. পপআপ উইজেট ৩ (Popup Widget 3)
আপনার মোবাইলের সেরা Android Widget এর সত্যিই অনেক দরকার রয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে আপনি যদি অনেকগুলো Android Widget একসঙ্গে ব্যবহার করতে থাকেন, তবে এটি খুব দ্রুতই আপনার হোমস্ক্রীন কে একেবারে এলোমেলো করে দিতে পারে এবং দেখা যাবে আপনার ফোনকে এটি অনেক ধীর গতির করে দেবে। কেননা অনেকগুলো Widget চালু করে রাখলে, এটি আপনার ফোনে অ্যাপ ইন্সটল করার মতোই একটি জায়গা নিয়ে থাকে।
এক্ষেত্রে Popup Widget 3 দ্বারা আপনি খুব সহজেই এই কাজগুলোকে সহজ করতে পারেন। আমরা দেখে থাকি, Android Widget গুলো বেশিরভাগ-ই অনেক জায়গাজুড়ে অ্যান্ড্রয়েড হোমস্ক্রীনে থাকে। এই অ্যাপটি আপনার মোবাইলে ইন্সটল করা থাকলে Android Widget গুলোকে আপনার মোবাইলের হোম স্ক্রিনে 1×1 আইকনে পরিণত করবে, যেটি সাধারণত স্বাভাবিক অ্যাপের সাইজ। এক্ষেত্রে পরবর্তীতে আপনি যখন সেই আইকনটিতে ক্লিক করবেন, তখন আপনি দেখতে পারবেন যে, এটির ভেতরে কি রয়েছিল।
এভাবে করেই অ্যাপটি আপনাকে Widget এর সুবিধা দিয়ে আপনার ফোনের পারফরম্যান্সে কোন ব্যাঘাত সৃষ্টি না করে, বরং আপনার ফোনকে আরো কিছুটা গতিশীল করে তোলে। আবহাওয়ার জন্য Weather Widget চালু করার মাধ্যমে আপনি আবহাওয়ার অ্যাপটি সম্পূর্ণ চালু না করে ও Weather Widget এর মাধ্যমে দেখতে পারেন।
আপনার মোবাইলে যদি অনেক ধরনের অ্যাপ ইন্সটল করা থাকে, তবে আপনি Android Widget-এ গেলে সেসব অ্যাপের অনেক Widget দেখতে পাবেন। আপনার যদি মনে হয়, সেসব অ্যাপগুলোর Widget আপনার মোবাইলের হোম পেজে রাখার দরকার রয়েছে, তবে আপনি এগুলোকে হোমপেজে রেখে এই অ্যাপটির মাধ্যমে এগুলোর আইকন ছোট করে আনতে পারেন।
Popup Widget 3
OfficialDownload @ Popup Widget 3
৩. নোটপিন (Notepin)
প্রতিদিন আমাদেরকে অনেক কাজ করতে হয় এবং কোন কোন কাজের কথা পরবর্তীতে করার জন্য আমাদেরকে মনে করেও রাখতে হয়। এক্ষেত্রে অনেক কর্ম ব্যস্ততার ভিড়ে আমাদের হয়তোবা অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজের কথা আর মনে থাকে না। আর এসময় আপনি যদি মোবাইল চালাতে থাকেন, তবে কখন যে আপনার গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো পার করে দিয়েছেন, তারও তো কোন হিসাবই থাকেনা। কিন্তু এমন যদি হয় যে, আপনার সামনে কোন একটি অ্যাপ বারবার সেই কাজের কথা মনে করিয়ে দিবে?
এক্ষেত্রে সেই অ্যাপটি হতে পারে নোটপিন অ্যাপ। নোটপিন অ্যাপটি আপনার এমন কিছু উপকার করবে যে, আপনি হয়তো বা ভাববেন কেন ইতিমধ্যেই আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনে এই অ্যাপটি ছিলনা। সোজা কথায় এই অ্যাপটির বর্ণনা দিতে গিয়ে বলা যায় যে, এই অ্যাপটির মাধ্যমে আপনি কোন নোট করলে, সেগুলোকে আপনার মোবাইলের বিজ্ঞপ্তি প্যানেলে পিন করে রেখে দেওয়া যায়।
এই অ্যাপটির ব্যবহার কিন্তু মোটেও জটিল নয়। আপনি সাধারণ নোটপ্যাড অ্যাপ এর মত এই অ্যাপটিতে গিয়ে কোনো একটি কাজের কথা মনে করে রাখার জন্য Title এবং Description লিখে সে গুলোকে Pin করে দিলে, সেগুলো আপনার বিজ্ঞপ্তি প্যানেলে প্রদর্শিত হবে। এক্ষেত্রে আপনি আলাদা আলাদা বিষয়গুলোকে আপনার বিজ্ঞপ্তি প্যানেলে প্রদর্শন করার জন্য প্রত্যেকটি ভিন্ন ভিন্নভাবে লিখে সেগুলোকে পিন করে সিলেক্ট করে দিতে পারেন। আপনি যখন কোনো একটি কাজের কথা লিখে সেটিকে পিন করে দিবেন, তখন এটি আপনার Notification বারে সবসময় প্রদর্শিত হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি এটিকে Unpinned করেন।
সবচাইতে মজার ব্যাপার হলো, আপনি যদি সমস্ত Notification মুছে দেবার জন্য Clear notification-তেও ক্লিক করেন, তবুও এটি Notification বার থেকে চলে যাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি সেই লেখাটিকে আনপিন করছেন। আর এক্ষেত্রে আপনি যখন কিছুক্ষণ পর পর কোন কাজের জন্য নোটিফিকেশন বার চেক করতে যাবেন, তখন অবশ্যই আপনার সেই কাজের কথা মনে হবে। অতএব বলা যায় যে, এটি আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করার অভিজ্ঞতা কে আশ্চর্যজনকভাবে পরিবর্তন করে দিতে পারে এবং এটি আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনের জন্য একটি আশ্চর্যজনক অ্যাপ। যে অ্যাপটির মাধ্যমে আপনি আপনার সময়ের যথাযথ ব্যবহার করতে পারেন এবং এতে করে আপনার সব কাজ সঠিক সময়েই হবে।
Notepin
Official Download @ Notepin
৪. ম্যাক্রোড্রয়েড (MacroDroid)
আমরা তো প্রতিদিন মোবাইলে অনেক কাজ করে থাকি। কিন্তু আমরা যেসব সাধারণ কাজগুলো মোবাইল চালানোর ক্ষেত্রে করে থাকি, এসব কাজগুলো কে আমাদের নিজেদেরকেই করতে হয়। এসব কাজগুলোর মধ্যে যেমনঃ কলেজে গিয়ে মোবাইলকে সাইলেন্ট মোড করা, মোবাইলে ভিডিও গেম খেলার সময় ব্রাইটনেস বাড়িয়ে দেওয়া এবং ফোনকে সাইলেন্ট করা ইত্যাদি বিষয়। কিন্তু প্রতিদিনের এসব কাজগুলো যদি স্বয়ংক্রিয়ভাবে হয়ে যায়, তাহলে ব্যাপারটি কেমন হয়? এক্ষেত্রে ব্যাপারটি আপনার কাছে নিশ্চয় অনেক বেশি আকর্ষণীয় হবে।
আপনার প্রতিদিনের কাজ গুলোকে অটোমেশন করার জন্য ম্যাক্রোড্রয়েড জনপ্রিয় একটি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ। আমার অভিজ্ঞতা মতে, আপনি আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনে এতদিন যে সমস্ত অ্যাপস গুলোকে ব্যবহার করেছেন, সেসব অ্যাপ গুলোর মধ্যে থেকে এই অ্যাপটি সবচাইতে সেরা হবে। আপনার ফোনে যে সমস্ত ফিচার ইতিমধ্যেই যুক্ত করা রয়েছে, তার চাইতে এই অ্যাপটি আপনাকে আরো অনেক বেশি ফিচার যুক্ত করে দিতে পারে, যেগুলো আপনার ধারণারও বাইরে। ম্যাক্রোড্রয়েড অ্যাপটি আপনার ফোনটিকে একেবারেই স্বয়ংক্রিয় করে তুলতে পারে। যদিও এই টিউনের মাঝে এই অ্যাপটির সম্পূর্ণ বর্ণনা দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়, কিন্তু তবুও আমি এই অ্যাপটি সম্পর্কে আপনাকে কিছুটা হলেও ধারনা দেবার চেষ্টা করছি।
এই অ্যাপটির মাধ্যমে আপনি এমন কিছু জটিল কাজকে অবিশ্বাস্য-ভাবে খুব সহজেই করতে পারেন। যেমন ধরুন, আপনি চাচ্ছেন যে, পাবজি গেম খেলার জন্য সেই অ্যাপস এর ভেতরে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার মোবাইলের ব্রাইটনেস বাড়িয়ে যাবে এবং সে সময় আপনার মোবাইলে Do not disturb মোড চালু হবে। আবার আপনি যখন সেই অ্যাপ থেকে বেরিয়ে এসে কলেজে যাবেন, তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে আবার আপনার মোবাইলটি সাইলেন্ট মোডে চলে যাবে। এসব কিছু স্বয়ংক্রিয়ভাবে করার জন্য আপনাকে শুধুমাত্র এই অ্যাপটি আপনার মোবাইলে ইন্সটল করতে হবে এবং আপনাকে সামান্য কিছু কাজ করে এগুলোকে সেট করতে হবে।
এই অ্যাপটি আপনার মোবাইলে ইন্সটল করা হয়ে গেলে, আপনাকে শুধুমাত্র কোন একটি কাজ করার জন্য সেটিং কনফিগার করতে হবে। অর্থাৎ, আপনি যে কাজটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে যে পদ্ধতিতে করতে চাচ্ছেন, সেটি সেট করে দিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি যদি কোনো একটি লোকেশন বা এরিয়া সিলেক্ট করে দেন, যেখানে গিয়ে আপনার মোবাইলটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সাইলেন্ট মোডে চলে যাবে, তাহলে আপনাকে একটি মাইক্রো তৈরি করতে হবে। এরপর আপনি সেই জায়গাটি সিলেক্ট করে, তারপর সেখানে আপনার মোবাইলটি কি কি আচরণ করবে, সেটি সিলেক্ট করে দিলে, আপনার মোবাইলটি সে অনুযায়ীই কাজ করবে।
এছাড়া কোন একটি অ্যাপ এর ভিতরে গিয়ে আপনার মোবাইলের ব্রাইটনেস এবং ভলিউম কিরকম হবে সেটিও আপনি সেট করে দিতে পারেন। এভাবে করে ভলিউম একেক জায়গায় একেক রকম করার জন্য আপনাকে হেড-ফোন ও ব্যবহার করা লাগতে পারে। আর এতে করে আপনি সূক্ষ্মভাবে প্রত্যেকটি কাজের ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয়তা নিয়ে আসতে পারেন।
আপনি নিশ্চয় প্রতি রাতে আপনার ফোনটিকে প্রায় সময়ই এয়ারপ্লেন মোডে রেখে ঘুমান। কিন্তু প্রতিদিন এভাবে করে Airplane mode-এ রেখে ঘুমানোর কথা যদি আপনার মনে না থাকে? তবে আপনি এক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন ম্যাক্রোড্রয়েড অ্যাপটিকে। যে অ্যাপটি আপনার মোবাইলকে ঠিক রাতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে Airplane mode-এ নিয়ে যাবে। এছাড়া ম্যাক্রোড্রয়েড অ্যাপটি আরও অনেক বেশি ব্যবহার রয়েছে, যেসব বর্ণনাগুলো আপনাকে এই টিউনের মাঝে সম্পূর্ণ দেওয়া সম্ভব নয
আমি চেষ্টা করব আগামীর কোন টিউনে এই অ্যাপটির বিভিন্ন ফিচার নিয়ে আলাদা আলাদা ভাবে সম্পূর্ণ টিউন করার। আপনি এই অ্যাপটির মাধ্যমে এমন সব ম্যাক্রো তৈরি করতে পারেন, যেগুলোর মাধ্যমে আপনার স্মার্টফোনে আপনার ইচ্ছার সূক্ষ্ম প্রতিফলন ঘটবে। এই অ্যাপটির মাধ্যমে আপনার স্মার্টফোনে কোন একটি ম্যাক্রো তৈরি করার মাধ্যমে এটি আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনকে আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তোলে এবং এটি আপনার অনেক জটিল কাজকে সহজ করে দেয়।
MacroDroid
Official Download @ MacroDroid
৫. আইএফ টি টি টি (IFTTT)
আপনারা উপরের ধাপে ম্যাক্রোড্রয়েড সম্পর্কে জেনে আসলেন। যেখানে ম্যাক্রোড্রয়েড অ্যাপ আপনার মোবাইলকে অটোমেশন করার কাজে ব্যবহার হয়। কিন্তু এটি শুধুমাত্র আপনার মোবাইলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। কিন্তু আপনি যদি এর চাইতে আরো বেশি অ্যাডভান্স কিছু নিয়ে কাজ করতে চান, তবে আইএফটিটেকটিউনস (IFTTT) হতে পারে আপনার জন্য সেরা পছন্দ। ম্যাক্রোড্রয়েড আপনার ফোনকে অনেকটা অটোমেশন বা স্বয়ংক্রিয়তা করতে নিখুঁত ভাবে কাজ করে, ঠিক তেমনি ভাবে IFTTT বিভিন্ন ওয়েব পরিষেবা গুলোকে অটোমেশন করার কাজে ব্যবহার হয়।
আইএফটিটেকটিউনস (IFTTT) অ্যাপে Applets তৈরি করার মাধ্যমে দুইটি ইন্টারনেটভিত্তিক পরিষেবাকে এক সঙ্গে সংযুক্ত করতে পারবেন। এখানে এই কথাটি বুঝতে আপনার হয়তোবা কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে। সমস্যা নেই, আমি আপনাকে এই বিষয়টি সম্পর্কে একটু বিস্তারিত আলোচনা করছি।
মনে করুন, আপনি ফেসবুকে কোন একটি Post করলেন। এবার আপনি পরবর্তীতে যদি ভিন্ন ভিন্ন প্লাটফর্মে একই Post করতে চান, তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে অতিরিক্ত সময় নিয়ে সেই Post টিকে পাবলিষ্ট করতে হবে। কিন্তু এমন যদি হতো যে, আপনি ফেসবুকে সেই Post টি শেয়ার করার পর পর সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন্যান্য প্লাটফর্মে ও Post হয়ে যেত? এক্ষেত্রে এটি আপনার কাছে অনেক বেশি আকর্ষণীয় এবং আপনার জন্য সময় সাশ্রয়ী হত। আর আপনার এই কাজটি করে দেবার জন্যই রয়েছে আইএফটিটেকটিউনস (IFTTT)।
এছাড়া আপনি যদি মনে করেন যে, ফেসবুকে কোন বন্ধু আপনাকে ট্যাগ করলে সেই ফটোগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে Dropbox-এ গিয়ে জমা হবে, তবে এটিও আপনি করতে পারেন আইএফটিটেকটিউনস (IFTTT) এর মাধ্যমে। আপনার স্মার্ট ডিভাইস কে নিয়ন্ত্রণ করতে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং টুইটারে টিউন করতে, গুগল ক্যালেন্ডারে আপনার কোন কাজের জন্য এসএমএসের সতর্কবার্তা পেতে, অথবা কোন কিছু কেনার ক্ষেত্রে আপনার পছন্দের পণ্যগুলোর দাম কমার ক্ষেত্রে বিজ্ঞপ্তি পেতে আপনি অবশ্যই IFTTT ব্যবহার করতে পারেন। আপনি এই অ্যাপটি ইন্সটল করে আপনার ডিভাইসে চালু করার পর আপনি সত্যিই অনেক বেশি আশ্চর্য হয়ে যাবেন। কিভাবে আপনার এত সব কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে হয়ে যাচ্ছে।
যেমন, আপনার যদি ভুলে যাওয়ার অভ্যাস থেকে থাকে এবং সেজন্য আপনি যদি প্রতিবছর আপনার প্রিয় বন্ধুদের জন্মদিনের শুভেচ্ছা মেসেজ করতে ভুলে যান, তবে আপনি IFTTT কে ব্যবহার করতে পারেন। এই অ্যাপটির মাধ্যমে আপনি সেই বন্ধুদের নাম্বারে আগে থেকেই প্রতিবছরের সেই তারিখের জন্য মেসেজ তৈরি করে রাখতে পারেন। এক্ষেত্রে সেই সেসময় যদি আপনার মোবাইলে এই অ্যাপটি ইন্সটল করা থাকে, তবে সেই তারিখে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদের কাছে মেসেজ চলে যাবে। এক্ষেত্রে আপনাকে আর কিছুদিন পরপর বন্ধুদের জন্য জন্মদিনের শুভেচ্ছা বার্তা লিখতে হবে না। সারা জীবনের জন্য একবার লিখলেই যথেষ্ট, তবে মেসেজের মধ্যে পরিবর্তন আনতে অবশ্যই প্রতিবছর আপডেট করতে পারেন।
তবে এই অ্যাপটি আপনার মোবাইলে শুধুমাত্র ইন্সটল করে রাখলেই কাজগুলো হবে না। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই এসব কাজের জন্য সেটিং করতে হবে। আপনি একই কাজগুলো আপনার মোবাইলে অ্যাপের মাধ্যমে ও করতে পারেন অথবা তাদের ওয়েবসাইট থেকেও করতে পারেন। স্বয়ংক্রিয়ভাবে এসব কাজগুলো কে করার জন্য আপনাকে যে সব সেটিং করতে হবে, সেগুলো আমি এই টিউনে দেখাতে পারছি না। সেক্ষেত্রে আপনাদেরকে আমার আগামী টিউনের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হচ্ছে।
যদিও এই অ্যাপটির এমন সব অসংখ্য ফিচার রয়েছে, যেগুলো আপনাকে একটি টিউনের মাঝে বলে বোঝানো সম্ভব নয়। আমি যদি শুধুমাত্র এই অ্যাপটি দিয়ে করা স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম এর কথা বলি, তবে টিউনটি অনেক বেশি দীর্ঘ হয়ে যাবে।
IFTTT
Official Download @ IFTTT
to be continued……