অনলাইন ডেস্ক ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২০:২৩
ডলারের একক দর নির্ধারণ করো দিলো ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীরা। আর অভিন্ন দর অনুযায়ী আজ থেকে প্রবাসীদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা দরে ডলার কেনা যাবে। আর রফতানি আয় নগদায়ন করা যাবে সর্বোচ্চ ৯৯ টাকা দরে। পাশাপাশি সর্বোচ্চ ১০৪ টাকা ৫০ পয়সা দরে আমদানি ঋণপত্র (এলসি) নিষ্পত্তি করা যাবে। ব্যাংকারদের নিজেদের এ একক দর সম্পর্কে গতকালই কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। আর আজ থেকেই অভিন্ন এ দর সব ব্যাংকগুলোই কার্যকর করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ব্যাংকগুলো তাদের নিজেদের এ দর কার্যকর করছে কিনা তা তদারকি করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীরা বৈঠক করে রোববারের মধ্যে ডলারের অভিন্ন দর নির্ধারণের জন্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
সোনালী ব্যাংকের মতিঝিলের প্রধান কার্যালয়ে গতকাল এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) শীর্ষ নেতারা এতে উপস্থিত ছিলেন। ডলারের চাহিদা ও জোগান পর্যালোচনা করে প্রবাসী আয়, রফতানি ও আমদানির ক্ষেত্রে দাম নির্ধারণের জন্য এ সভায় মিলিত হন তারা।
সভায় বাফেদা চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আফজাল করিম, এবিবি চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি সেলিম আর এফ হোসেন উপস্থিত ছিলেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সব ব্যাংকে ডলারের দাম হবে এক। ব্যাংকগুলো নিজেরাই এ দাম নির্ধারণ করবে। তারই অংশ হিসেবে গতকাল নিজেরা সভা করে ডলারের দাম ঠিক করেছেন বাফেদা ও এবিবি নেতারা। সভা শেষে আফজাল করিম সাংবাদিকদের বলেন, বেঁধে দেয়া নতুন এই দাম সব ব্যাংক মেনে চলবে।
আর সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, সময়ে-সময়ে এই দাম পরিবর্তন হবে। আশা করছি, এর মাধ্যমে বাজারে স্থিতিশীল ফিরে আসবে। বর্তমানে ডলারের যে দাম, সেই অনুযায়ী নতুন দাম নির্ধারণ হয়েছে। ফলে এর চেয়ে বেশি দাম বাড়ার কারণ নেই। বাজারভিত্তিক এই দাম বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যালোচনা ও তদারকি করবে। তবে দাম নির্ধারণ হবে বাজারের ওপর ভিত্তি করেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ডলার মজুদ করে কৃত্রিমভাবে দাম বাড়িয়ে মুনাফা হাতিয়ে নিয়েছিল কিছু ব্যাংক। এমন ১৩টি ব্যাংককে ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জবাবদিহিতার আওতায় আনা হয়েছে। ব্যাংকগুলোকে শোকজ করা হয়েছে। ছয়টি ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানদের অপসারণ করা হয়েছে। আরো সাতটির প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এর পর থেকেই বাজারে ডলারের উল্লম্ফন কিছুটা থেমে গেছে। তবে ব্যাংকগুলোর ডলারের দর ভিন্ন ভিন্ন হওয়ায় ব্যাংকভেদে ডলারের মূল্যের তারতম্য দেখা দেয়। এ তারতম্য কমাতেই মূলত ডলারের একক দর নির্ধারণের পরামর্শ দেয়া হয়। কোনো কোনো ব্যাংক রেমিট্যান্স সংগ্রহ করে ১১৩ টাকায়। কোনো কোনোটি সংগ্রহ করে ১০৫ টাকা। এভাবে বেশি দামে ডলার কিনে বেশি দামে বিক্রি করায় বাজারে অস্থিতিশীলতা কাটছে না। আর এ কারণেই অভিন্ন দর নির্ধারণের জন্য ব্যাংকগুলোকে তাগিদ দেয়া হয়। আর এজন্য ব্যাংকগুলোকেই দায়িত্ব দেয়া হয়। তাদের দেয়া দর গতকালই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে। আজ থেকেই তা তদারকি করা হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে।