অনলাইন ডেস্ক ০৪ অক্টোবর ২০২২,০৯ঃ২০

পুতিন ইউক্রেনের কিছু অংশ রাশিয়ার অন্তর্গত করে যে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছেন,তার বিরুদ্ধে আরও জোরালো অবস্থান নিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)৷ কূটনৈতিক, সামরিক ও রাজনৈতিক পদক্ষেপ নিতে মিলিত হচ্ছেন ইইউ শীর্ষ নেতারা৷

গত সপ্তাহের একাধিক ঘটনা ইউরোপ তথা পশ্চিমা বিশ্বের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে৷ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের অধিকৃত অঞ্চলকে একতরফাভাবে রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন৷ এ ঘটনার জবাবে ইউক্রেন দ্রুত সামরিক জোট ন্যাটোয় যোগদানের আবেদন করেছে৷ সে দেশের সেনাবাহিনী রুশ অধিকৃত এলাকার আরও অংশ নিয়ন্ত্রণে আনতে সফল হচ্ছে৷ নর্ড স্ট্রিম গ্যাস পাইপলাইনের ওপর রহস্যজনক হামলাও ইউরোপের জরুরি অবকাঠামোর নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে ফেলেছে৷

এমন পরিবর্তিত পরিস্থিতি সম্পর্কে আলোচনা করতে শুক্রবার চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী প্রাগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে৷ সেখানে ইউক্রেনের জন্য অর্থনৈতিক, সামরিক ও আর্থিক সহায়তা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কথা হবে৷ সেই সঙ্গে জ্বালানি ও বিদ্যুতের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি থেকে ইউরোপের সাধারণ মানুষকে রেহাই দিতে আরও পদক্ষেপ স্থির করতে চান ইইউ নেতারা৷ দু-দুটি নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনের ওপর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে বাল্টিক সাগর তথা ইউরোপের অন্য অংশে এমন জরুরি অবকাঠামোর সুরক্ষা আরও জোরদার করার জন্যও চাপ বাড়ছে৷

রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়াতে ইউরোপের দেশগুলো ইতোমধ্যে তৎপরতা বাড়াচ্ছে৷ বেআইনিভাবে ইউক্রেনের ভূখণ্ড ছিনিয়ে নেওয়ার প্রতিবাদে একাধিক ইইউ দেশ রুশ রাষ্ট্রদূতদের তলব করা শুরু করেছে৷ জার্মানি, ইতালি, অস্ট্রিয়া ও ডেনমার্কের এমন কূটনৈতিক পদক্ষেপের পর অন্যান্য কিছু দেশও চলতি সপ্তাহে এভাবে প্রতিবাদ জানাবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ রোববার টেলিফোনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলে সে দেশের জন্য সহায়তা ও সমর্থন চালিয়ে যাবার আশ্বাস দেন৷ জার্মানি, ডেনমার্ক ও নরওয়ে ইউক্রেনের জন্য আরও ১৬টি সাঁজোয়া হাউইৎসার আর্টিলারি সিস্টেম সরবরাহের যৌথ সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ সেই সঙ্গে ইউক্রেনকে স্লোভাকিয়ায় তৈরি ‘জুজুনা-২’ বন্দুক সরবরাহ করতে এই তিন দেশ ৯ কোটি ২০ লাখ ইউরো মূল্য বহন করবে৷ তবে আগামী বছরের আগে সেই বন্দুক সরবরাহ করা সম্ভব হবে না৷ জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টিনে লামব্রেশট সপ্তাহান্তে প্রথমবার ইউক্রেন সফর করার পর এই ঘোষণা করা হয়েছে৷

ইউক্রেনের ভূখণ্ডের একাংশ সরাসরি রাশিয়ার অন্তর্গত করার ঘোষণার পর কিয়েভ সরকার ইউরোপ তথা পশ্চিমা জগতের কাছ থেকে আরও অস্ত্র ও ভারী সামরিক সরঞ্জাম চাইছে৷ কিন্তু ব্যাটেল ট্যাংকের মতো আক্রমণাত্মক সামরিক সরঞ্জাম দিতে দ্বিধা করছে আমেরিকাসহ একাধিক পশ্চিমা দেশ৷ ইউক্রেন জার্মানির কাছে লেপার্ড ব্যাটেল ট্যাংক চাইলেও জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস এখনও এমন সরঞ্জাম পাঠাতে অস্বীকার করছেন৷ তিনি সহযোগীদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে এ ক্ষেত্রে সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার ওপর জোর দিচ্ছেন৷ জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী লামব্রেশট ইউক্রেন থেকে ফিরে আবার বলেছেন, নানাভাবে ইউক্রেনের জন্য সহায়তা চালিয়ে যাওয়া হলেও জার্মানি তথা ন্যাটো যাতে সরাসরি এই সংঘাতের অংশ না হয়ে পড়ে, সে বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে৷

উল্লেখ্য, ওডেসা সফরের সময় রুশ হামলার আশঙ্কায় সাইরেন শুনে জার্মান মন্ত্রীকে দু-দুবার বাংকারে আশ্রয় নিতে হয়েছিল৷

সৌজন্যে : ডয়চে ভেলে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *