ব্যাংক ও বৈদেশিক উৎস থেকে সরকারের ঋণ বেড়েছে

 অনলাইন ডেস্ক ২৪ আগস্ট ২০২২, ০১:০০

বাজেট ঘাটতি অর্থায়নে শেষ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে প্রায় ৯২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার। এই ঋণের মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে নেয়া হয়েছে ৪৫ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। আর বিদেশী উৎস থেকে নেয়া হয়েছে ৪৬ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা।
গত ২০২১-২২ অর্থবছরের মূল বাজেটে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ ধরা হয়েছিল দুই লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে এটি কমিয়ে দুই লাখ ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মোট ঋণের পরিমাণ সংশোধিত বাজেটে ৪৫ শতাংশ।
অর্থ বিভাগের সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যানে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বাজেট ঘাটতি মেটাতে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই ২০২১-মার্চ ২০২২) অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৪৫ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার (এটি বাজেট ঘাটতি অর্থায়নের ৫০.৬২ শতাংশ)। এর মধ্যে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ঋণ নেয়া হয়েছে ২৯ হাজার ৩৯৪ কোটি টাকা (এটি মোট অভ্যন্তরীণ ঋণের ৬৪.৭৫ শতাংশ) এবং ব্যাংকবহির্ভূত খাত বিশেষত সঞ্চয়পত্র খাত থেকে ১৬ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা (এটি মোট অভ্যন্তরীণ ঋণের ৩৫.২৫ শতাংশ) ঋণ নেয়া হয়েছে।
২০২১-২২ অর্থবছরের মূল বাজেটে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে এটি বাড়িয়ে ৮৭ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছে। অন্য দিকে মূল বাজেটে সঞ্চয়পত্র খাত থেকে ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩২ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটেও এটি অপরিবর্তিত করে রাখা হয়েছে।

দেখা যায়, আগের অর্থবছরের (২০২০-২১) একই সময়ের (জুলাই-মার্চ) তুলনায় সমাপ্ত ২০২১-২২ অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি অর্থায়নে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে সরকারের নিট ঋণ গ্রহণ বেড়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ৭৩৩ কোটি টাকা। সে হিসাবে সমাপ্ত অর্থবছরের একই সময়ে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণ ১৫ হাজার ৬৬১ কোটি টাকা বেড়েছে। অন্য দিকে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে সঞ্চয়পত্র খাত থেকে ঋণ নেয়া হয়েছিল ৩৩ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। সে হিসাবে সমাপ্ত অর্থবছরের একই সময়ে সঞ্চয়পত্র খাত থেকে ঋণ গ্রহণ কমেছে ১৭ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগের হিসাব মতে, বাজেট ঘাটতি অর্থায়নে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই ২০২১-মার্চ ২০২২) বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ নেয়া হয়েছে ৪৬ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা। এটি বাজেট ঘাটতি অর্থায়নের ৪৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
অর্থ বিভাগের তথ্যানুযায়ী,বাজেট ঘাটতি অর্থায়নে দ্বিপক্ষীয় নমনীয় ঋণের ওপর জোর দিয়ে যাচ্ছে সরকার। গৃহীত বৈদেশিক ঋণের ৫৩ দশমিক ৮১ শতাংশ দ্বিপক্ষীয় এবং ৪৬ দশমিক ১৯ শতাংশ বহুপক্ষীয় ঋণ।
উল্লেখ্য,সমাপ্ত অর্থবছরের মূল বাজেটে বৈদেশিক উৎস থেকে নিট ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৭ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে এটি কমিয়ে ৮০ হাজার ২১২ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজেট ঘাটতি অর্থায়নে বৈদেশিক উৎস থেকে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার ৫৮ শতাংশ ঋণ নেয়া হয়েছে।
পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বাজেট ঘাটতি অর্থায়নে আগের অর্থবছরের (২০২০-২১) প্রথম ৯ মাসের (জুলাই-মার্চ) তুলনায় সমাপ্ত ২০২১-২২ অর্থবছরের একই সময়ে সরকারের বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ বেড়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে এ খাত থেকে সরকারের নিট ঋণ গ্রহণের পরিমাণ ছিল ১১ হাজার ১০৬ কোটি টাকা। সে হিসাবে সমাপ্ত অর্থবছরে এ খাতে সরকারের ঋণ গ্রহণ বেড়েছে ২৫ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *