১৮ নভেম্বর ২০২২, ৩ অগ্রহায়ন ১৪২৯, ২২ রবিউস সানি ১৪৪৪ হিজরি
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপের ২২তম আসর মাঠে গড়াবে রোববার (২০ নভেম্বর)। ইতিহাসে এবারই প্রথম এশিয়ার কোনো মুসলিম দেশ হিসেবে বিশ্বকাপ আয়োজন করছে শক্তিশালি অর্থনীতির দেশটি। ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ খ্যাত বিশ্বকাপকে ঘিরে এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশটি। তবে মুসলিম দেশ হওয়ায় ধর্মীয় নানা বিধিনিষেধের জেরে বিশ্বকাপের স্টেডিয়ামগুলোতে অ্যালকোহল পানে নিষেধাজ্ঞা জারি করছে কাতার সরকার।
বিশ্বকাপ উপলক্ষে বেশ কিছু বিষয়ে নিয়মকানুন কিছুটা শিথিল করেছিল আয়োজক দেশটি। তখন স্টেডিয়ামে অ্যালকোহল বিক্রির বিষয়টিও অনুমোদন পেয়েছিল ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে কাতারের রাজপরিবার বিশ্বকাপে স্টেডিয়ামের ভিতরে অ্যালকোহল বিক্রি বন্ধের জন্য ফিফাকে চাপ দিচ্ছে।
স্টেডিয়ামে অ্যালকোহল পান নিষিদ্ধ হলেও সারা বিশ্ব থেকে আসা বিদেশি পর্যটকদের জন্য দেশটিতে লাইসেন্স প্রাপ্ত কিছু রেস্তোরাঁয় অ্যালকোহল সেবনের অনুমতি দিয়েছে। তবে মুসলিমদের ক্ষেত্রে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে অ্যালকোহল কাণ্ডে।
কাতারের এমন সিদ্ধান্তে বেশ বিপাকে পড়েছেন ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। কারণ, কাতার বিশ্বকাপের স্টেডিয়ামে বিয়ার বিক্রির জন্য ‘বুঁদউইজার’ নামক প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দিয়েছিল ফিফা। যারা আবার বিশ্বকাপে বেশ বড় স্পন্সরও। এখন শেষ মুহূর্তের এই ঘটনায় যদি তারা বিশ্বকাপে অর্থ বিনিয়োগ করতে না চায়, তাহলে বিশাল অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে ফিফাকে।
কাতার নিষেধাজ্ঞার আদেশ জারি করলেও এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য ফিফার পক্ষ থেকে পাওয়া যায়নি। তবে বিয়ার বিক্রির কোম্পানির সঙ্গে ফিফা এ নিয়ে আলোচনায় বসবে বলে জানাচ্ছে অনেক গণমাধ্যম। তবে কাতারের রাজপরিবারের জারিকৃত নিষেধাজ্ঞাকে বাদ দিয়ে বিয়ারকে বৈধতা দেওয়াটাও ফিফার পক্ষেও সম্ভব নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজকের দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে শুরু থেকেই বেশ আলোচনা-সমালোচনা চলছিল। বিশেষ করে ইউরোপ-আমেরিকার বেশ কিছু দেশ কাতারে বিশ্বকাপের মঞ্চ করার ঘোর বিরোধিতা করে আসছে। এমনকি ফিফার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সেপ ব্লাটারও নিজের সিদ্ধান্তকে ভুল বলেছেন। তবে এতোকিছু সত্ত্বেও বিশ্বকাপের সফল আয়োজনের চেষ্টা করছে কাতার।
এর আগে, ১৯৮৬ ও ২০১৪ বিশ্বকাপেও অ্যালকোহলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল আয়োজক দেশ। অতীতে বৈশ্বিক ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজকরাও এক্ষেত্রে সফল হয়েছিল। এবার কাতারও সফল হওয়ার পথে।
উল্লেখ্য, আগামী ২০ তারিখ স্বাগতিক কাতার সঙ্গে ইকুয়েডরের ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠবে বিশ্বকাপের। ৬৩ ম্যাচের এই লড়াই আগামী ১৮ ডিসেম্বর ফাইনালের মধ্যদিয়ে শেষ হবে।