কপিরাইট লঙ্ঘন একটি বড় ইস্যু এবং বেশিরভাগ সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলি এটিকে গুরুত্বের সাথে দেখে। আপনি যদি কোনও কপিরাইটযুক্ত ভিডিও বা গান ইউটিউবে টিউন করেন, তাহলে সাথে সাথে আসল মালিকের কাছে নোটিফিকেশন চলে যাবে এবং আপনাকে আইনি ব্যবস্থা এড়াতে এটি মুচে ফেলতে হবে অথবা কখনো কখনো স্বয়ংক্রিয়ভাবেই এটি মুছে দেয়া হয়।
তবে সব কোম্পানি বা কপিরাইট হোল্ডার বিষয় গুলো সমান ভাবে বিবেচনা করে না বা সব সময় আইনি ব্যবস্থা ও নেয় না।
ফেক কপিরাইট এলার্ট এবং হ্যাকিং
যাই হোক আইন জড়িত থাকার কারণে লোকেরা কপিরাইট লঙ্ঘনকে গুরুত্বের সাথে নিতে থাকে। আর এটিকেই ব্যবহার করে স্ক্যামাররা তারা ইউজারদের ডেটা চুরি করতে কখনো কখনো ব্যবহার করে ফেক কপিরাইট এলার্ট। আপনি যদি ফেসবুকে এই ধরনের কপিরাইট এলার্ট পেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই সতর্ক হয়ে যান, হতে পারে আপনার পাসওয়ার্ড বা Two Factor Login কোড হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে হ্যাকাররা।
Sophos Labs, এর মতে ফেসবুকে নতুন ধরনের স্ক্যাম ছড়িয়ে পড়েছে যার মাধ্যমে স্ক্যামাররা ফেক কপিরাইট লঙ্ঘনের এলার্ট পাঠাচ্ছে এবং ইউজারদের প্রতারিত করে Passwords, Phone Number এবং Two Factor Login কোড হাতিয়ে নিচ্ছে।
এই ধরনের ট্রিক্স কিভাবে কাজ করে
নতুন এই মেথডকে আপনি ফিশিংও বলতে পারেন, ফিশিং হচ্ছে মূলত একধরনের সহজ ধোঁকা। ধরুন আপনি প্রতিদিন ফেসবুকে লগইন করছেন, জিমেইলে সাইন ইন করছেন, পণ্য কেনা কাটা করতে গিয়ে আপনার বিভিন্ন তথ্য যেমন নাম, ঠিকানা, ফোন নাম্বার, ক্রেডিট কার্ড নাম্বার দিচ্ছেন। আপনি কি নিশ্চিত যে যে সাইট গুলোতে আপনি আপনার একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য গুলো দিচ্ছেন সেগুলো আসল সাইট!
আপনার ইমেইলে স্ক্যামাররা একটি মেইল পাঠাবে যেখানে বলা হবে আপনি কোন কন্টেন্ট কপিরাইট লঙ্ঘন করছেন। ভয় দেখাবে যদি আপনি ব্যবস্থা না নেন তাহলে একাউন্ট অফ করে দেয়া হবে।
এবার যে পেজ ওপেন হবে এটা কোন ফেবুকের পেজ নয়, এটা হবে ফিশিং সাইট যা দেখতে ফেসবুকের মতই দেখাতে পারে। সেই পেজে আপনার ইমেইল, ফোন নাম্বার, এবং ইমেইল চাইতে পারে। কখনো কখনো ইনফরমেশন গুলো দুইবারও চাইতে পারে তারা।
পরের স্টেপে তারা আপনার Two Factor Login কোডও চাইতে পারে।
যাই হোক আশা করছি তাদের ট্রিক্সটি ধরতে পেরেছেন।
কিভাবে নিরাপদ থাকবেন
পরের স্টেপে তারা আপনার Two Factor Login কোডও চাইতে পারে।
যাই হোক আশা করছি তাদের ট্রিক্সটি ধরতে পেরেছেন।
কিভাবে নিরাপদ থাকবেন
চলুন দেখে নেয়া যাক কিভাবে নতুন এই ফাঁদ থেকে বাঁচতে পারবেন,
ইমেল এড্রেস চেকঃ প্রথমেই চেক করুন আপনার ইমেইলটি কে পাঠিয়েছে এবং এর এড্রেস কি।
এড্রেস বার খেয়াল রাখাঃ ইমেইল থেকে যে লিংককে প্রবেশ করেছেন সেটা চেক করুন, এড্রেসবারের দিকে নজর রাখুন। যেমন ফেসবুকের কোন পেজে থাকা কালীন খেয়াল করে দেখুন এড্রেস-বারে http://www.facebook.com আছে কিনা।
ফেসবুককে অবগত করুনঃ যেকোনো ফিশিং ইমেইল পেলে সেটা phish@fb.com ইমেইলে অবশ্যই জানান এতে করে ফেসবুক সেসব লিংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে
স্প্যাম লিংক ক্লিক করা থেকে বিরত থাকুনঃ কখনো ইমেইলে আসা কোন এড্রেসে ক্লিক করা যাবে না বা যেসব মেইল কোন লগইন পেজে নিয়ে যায় সেটা সম্পূর্ণ রূপে পরিহার করুন।
যেহেতু এই মেথডে Two Factor Login ও বাইপাস হয়ে যায় সুতরাং কখনো কখনো আপনার পাসওয়ার্ড লিক হয়েই যেতে পারে। সেক্ষেত্রে নিচের ধাপ গুলো ফলো করুন,
- ডেক্সটপ থেকে ফেসবুকে যান, ডান পাশ থেকে account বাটনে ক্লিক করুন
- Settings থেকে Settings & Privacy তে যান
- Security and Login এ ক্লিক করুন
- Change password এ ক্লিক করুন
- আপনার পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে ফেলুন
শেষ কথাঃ
প্রযুক্তি যত আধুনিক হচ্ছে একই সাথে হ্যাকাররাও তত চালাক হচ্ছে আর তাই হ্যাকারদের সকল ধরনের ফাঁদ থেকে বেচে থাকতে আপনাকে আগে সচেতন হতে হবে। ফিশিং মেইল নতুন কিছু নয় তারপরও প্রতিনিয়ত হাজার হাজার একাউন্ট হ্যাক হচ্ছে। হয়তো পদ্ধতিতে পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু প্রক্রিয়া একই, আপনাকে বোকা বানানো।
এর আগেও অনেক টিউনে বলেছি যেকোনো ইমেইলের লিংকে প্রবেশ করার আগে অবশ্যই ভাল করে, কে পাঠিয়েছে এবং ল্যান্ডিং পেজ কেমন সেটা যাচাই করুন। বারবারের মতই বল সকল ধরনের হ্যাকিং থেকে বাচতে অবশ্যই সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে সচেতন থাকুন।
তো কেমন হল আজকের টিউন জানাতে অবশ্যই টিউমেন্ট করুন, আমাদের জানান আপনারও কোন হ্যাকিং অভিজ্ঞতা আছে কিনা।
আজকের মত এই পর্যন্তই, পরবর্তী টিউন পর্যন্ত ভাল থাকুন। আল্লাহ হা-ফেজ।