৩১ অক্টোবর ২০২২, ১৫ কার্তিক ১৪২৯, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৪ হিজরি

কোভিড সংকটের পর বিশ্ব অর্থনীতি যখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল,তখনই শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এতে এশিয়া অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস হ্রাস করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। বৈশ্বিক মুদ্রা-সংক্রান্ত কঠোরতা, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি, চীনা অর্থনীতির ধীরগতি ও ইউক্রেনের যুদ্ধের জন্য উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আগের দেওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী প্রবৃদ্ধি হবে না বলে মনে করছে সংস্থাটি।

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পূর্বাভাস শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) প্রকাশ করেছে আইএমএফ। সেখানে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসও দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ২০২২ সালে (পঞ্জিকাবর্ষ) বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াতে পারে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। তবে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে প্রবৃদ্ধির হার আরও কমবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ২০২৩ সালে প্রবৃদ্ধির হার কমে দাঁড়াবে ৬ শতাংশ। ২০২৪ সালে তা কিছুটা বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। যদিও চলতি মাসের ১০ থেকে ১৬ অক্টোবর বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের যৌথ বৈঠকের সময়ও আইএমএফ বাংলাদেশ সম্পর্কে একই পূর্বাভাস করা হয়েছিল।

আর চলতি ও পরের বছরে এশিয়ার প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে যথাক্রমে ৪ ও ৪ দশমিক ৩ শতাংশ করা হয়েছে, যা গত এপ্রিলে দেওয়া পূর্বাভাসের চেয়ে যথাক্রমে দশমিক ৯ ও দশমিক ৮ পয়েন্ট কম। ২০২১ সালে এ অঞ্চলের প্রবৃদ্ধি ছিল সাড়ে ৬ শতাংশ।

করোনা মহামারির পাশাপাশি বৈশ্বিক মুদ্রানীতির কঠোরতা ও রপ্তানি চাহিদা হ্রাস পাচ্ছে বলে প্রতিবেদনে বলা করা হয়েছে। এর সঙ্গে চীনের কড়া কোভিড নীতি ও এর প্রভাবে ঋণে জর্জরিত আবাসন খাতের কথা উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, চীনের ব্যাংকিং ব্যবস্থা এ কারণে ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

আইএমএফ বলছে, চলতি বছর চীনের প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়াতে পারে ৩ দশমিক ২ শতাংশ, যা এপ্রিলের পূর্বাভাসের চেয়ে ১ দশমিক ২ শতাংশ কম। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি আগামী বছর ৪ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ২০২৪ সালে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এশিয়ার উদীয়মান অর্থনীতিগুলো পুঁজির দ্রুত বহির্গমন এড়াতে সুদের হার বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে হস্তক্ষেপের ক্ষেত্রে বিচক্ষণতা দেখাতে হবে, তাহলে কিছু দেশে মুদ্রানীতির ওপর চেপে থাকা বোঝা কমতে পারে।

সংস্থার এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক কৃষ্ণা শ্রীনিবাসন বলেন, বছরের শুরু থেকে এশিয়ার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার গতি হারাচ্ছে। এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশার চেয়ে দুর্বল ছিল। মূল্যস্ফীতির রাশ টেনে ধরে তা স্থিতিশীল করতে মুদ্রানীতিতে আরও কঠোরতার প্রয়োজন হবে, কিন্তু এতে প্রবৃদ্ধির গতি আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায় বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *