অনলাইন ডেস্ক বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ৭ আশ্বিন ১৪২৯

ইরানে ড্রেস কোড লঙ্ঘনের দায়ে গ্রেপ্তার হওয়া এক নারী পুলিশ হেফাজতে মারা গেছেন। এর প্রতিবাদে গত তিনদিন ধরে চলছে বিক্ষোভ।

রাজধানী তেহরান তো বটেই, সেইসঙ্গে ইরানের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবল বিক্ষোভ হচ্ছে।

সোমবার তৃতীয় দিনের বিক্ষোভেও যোগ দিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। তারা মাশা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

সোমবার ইরানের কুর্দি-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ গুলি চালায়। তাতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।

তেহরান ও কুর্দি-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা অনেকটা সময় ধরে বন্ধ রাখা হয়েছিল। তেহরানে বিক্ষোভকারীদের মোকাবিলায় রায়ট পুলিশ নামানো হয়েছিল।

লন্ডনভিত্তিক ওয়াচডগ গোষ্ঠী নেটব্লকস জানায়, পশ্চিম ইরানে কুর্দিদের এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ রাখা হয়।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠী হেনগও সোমবার দাবি করেছে, কুর্দিদের একটা এলাকায় দুজন বিক্ষোভকারী মারা গেছেন।

ইরানের কর্মকর্তারা অবশ্য এই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন।

তারা জানিয়েছেন, কিছু বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু কেউ মারা যাননি। মারা যাওয়ার খবর কেবল সামাজিকমাধ্যমে আছে।

মাশা আমিনির মৃত্যু

গত মঙ্গলবার মাশা আমিনিকে ইরানের নীতি পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

ইরানের ড্রেস কোড বা পোশাকবিধি অনুসারে মেয়েদের মাথা ঢাকা বা হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। মাশা তা পরেননি। তাই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ হেফাজতে মাশার শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে।

পুলিশের দাবি, মাশার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়নি। তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

কিন্তু তার পরিবার জানিয়েছে, মাশা অসুস্থ ছিলেন না। তার স্বাস্থ্য ঠিক ছিল। গ্রেপ্তার হওয়ার সময়ও তার শরীর একদম ঠিক ছিল।

পুলিশ ক্লোজ সার্কিট টিভির ফুটেজ প্রকাশ করে দাবি করেছে, মাশা থানায় ছিলেন, সেখানেই তার শরীর খারাপ হয়।

আমিনির শেষকৃত্যের পরই বিক্ষোভ

মাশা আমিনি একজন কুর্দি।

তাকে পশ্চিম ইরানের সাকেজে কবর দেওয়া হয়।

তারপর থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা ভাঙচুর শুরু করে। পুলিশ অনেককে গ্রেপ্তার করে। কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়।

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি আমিনির পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। তারপর তিনি বিচার বিভাগীয় ও সংসদীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

১৯৭৯ সালে ইরান ইসলামিক রিপাবলিক হওয়ার পর থেকে মেয়েদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

সৌজন্যে : ডয়েচে ভেলে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *