সোমবার ,১৪ নভেম্বর ২০২২ । ২৯ কার্তিক ১৪২৯ । ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৪
খেলাপি ঋণের পরিমাণ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। খেলাপির স্রোতে হাবুডুবু খাচ্ছে দেশের ব্যাংকগুলো। চলতি বছরে মাত্র তিন মাসে (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর) খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৯ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে একলাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত এটিই সর্বোচ্চ খেলাপি ঋণের অঙ্ক।
রোববার (১৩ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাস শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৩৬ হাজার ১৯৯ কোটি ৮২ লাখ টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণে পরিণত হয়েছে এক লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে অর্থাৎ চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট বিতরণ করা ঋণ ছিল ১৩ লাখ ৯৮ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণে পরিণত হয়েছে এক লাখ ২৫ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়ে তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৯ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা।
তবে ব্যাংক খাতের প্রকৃত খেলাপি ঋণের অঙ্ক নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসেবের বাইরে অবলোপন করা খেলাপি ঋণ রয়েছে আরও প্রায় অর্ধ লাখ কোটি টাকা। এ ছাড়া উচ্চ আদালতে রিট করে অনেক ঋণ নিয়মিত করে রাখা হয়েছে। ফলে আসলে কত টাকা খেলাপি ঋণ রয়েছে, তার সুনির্দিষ্ট ও বিশ্বাসযোগ্য কোনো তথ্য নেই। বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যাংক খাতের সঠিক হিসাব করলে প্রকৃত খেলাপি ঋণ আড়াই থেকে পৌনে ৩ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ড. গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ছাড় দেওয়ার কারণে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। এখন থেকে ভালো করে যাচাই-বাছাই করে ঋণ দিতে হবে। এক খাতের ঋণ অন্য খাতে যাচ্ছে কি না সেটাও নিশ্চিত হতে হবে।
তিনি বলেন, ঢালাওভাবে সুবিধা দেওয়া যাবে না। খেলাপি ঋণ কমাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠাও জরুরি। আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হলে খেলাপি ঋণ কমে আসবে।