নিজস্ব প্রতিবেদক ২৮ জুন ২০২২, ২০:৫১

১২ জন বিচারপতি করোনায় আক্রান্ত

নতুন করে করোনা সংক্রমণের পর থেকে গতকাল সোমবার সকাল পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি করোনা শনাক্ত হয়েছে দেশে। গত রোববার সকাল ৮টার পর থেকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত দেশে মোট দুই হাজার ১০১ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে। একই সময়ে আবারো মৃত্যু হয়েছে দুজনের। করোনা দিন দিন বেড়েই চলছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা হচ্ছে অসাবধানতার কারণে। দেশে যত করোনা শনাক্ত হচ্ছে এর ৯০ শতাংশই রাজধানী ঢাকায়। ঢাকার মানুষ গত ফেব্রুয়ারি থেকেই মাস্ক পরা ছেড়ে দিয়েছে। ফলে করোনা হু হু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে ৭৫ শতাংশ মানুষকে দুই ডোজ করোনার টিকা দেয়া হয়ে গেছে। জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, মানুষ মনে করছে টিকা তাদের করোনা থেকে রক্ষা করবে। এ ব্যাপারে জনস্বাস্থ্যবিদ অধ্যাপক ড. আবু মো: জাকির হোসেন বলেন, আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ মনে করে, করোনার টিকা নিয়েছে, তাই তাদের আর করোনা হবে না। কিন্তু তারা এ তথ্যটা জানে না যে, করোনার টিকা নিলেও করোনা হতে পারে। তবে টিকাপ্রাপ্তদের হাসপাতালে খুবই কম যেতে হয়, তাদের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা কম হয়। যদিও টিকা আবিষ্কারকরা টিকা নিলে মৃত্যু হবে না এমন গ্যারান্টি দেননি।’
গতকাল যে দুই হাজার ১০১ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে এর ৮৫.৯৬ শতাংশই ঢাকা মহানগরীতে শনাক্ত হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, একই সময়ে ঢাকা মহানগরীতে করোনা শনাক্ত হয়েছে এক হাজার ৮০৬ জন। ঢাকার বাইরে ঢাকা বিভাগে মোট শনাক্ত হয়েছে এক হাজার ৯০০ জন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ১১৯, রাজশাহী বিভাগে সাতজন, খুলনা বিভাগে ১৯ জন, বরিশাল বিভাগে ১৩ জন, সিলেট বিভাগে সাতজন, রংপুর বিভাগে ১০ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৪ জন।
ড. জাকির হোসেন বলেন, এখনই সাবধানতা অবলম্বন না করলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই শনাক্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে চার হাজারে পৌঁছে গেলেও আশ্চর্য হবো না। তিনি বলেন, জনসমাবেশে আবারো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত। বাসে যাতায়াত করলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। একই সাথে সবাইকে আবারো ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। পানি না থাকলে স্যানিটাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, ১৩ থেকে ১৯ জুন এ এক সপ্তাহের তুলনায় ২০ থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত এক সপ্তাহে দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে ৫৩.৪ শতাংশ বেড়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের ১২ বিচারক করোনা আক্রান্ত : সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের ১২ জন বিচারক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। গতকাল আদালতের কার্যক্রমের শুরুতে প্রধান বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ করে বলেন, ১২ জন বিচারপতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় আদালত পরিচালনা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, দ্বৈত বেঞ্চের একজন করোনায় আক্রান্ত হলে ওই বেঞ্চের বিচার কাজ বন্ধ থাকে। করোনার কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বেঞ্চে বিচারকাজ বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় আপনারা যদি সহযোগিতা না করেন তাহলে আমাদের জন্য বিষয়টি কঠিন হয়ে পড়ে। আপনারা সহযোগিতা না করলে আমাদের ভার্চুয়ালি কোর্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তারপরও ধৈর্য ধরেন আমরা দেখছি।
এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, আমাদের অনেক আইনজীবীও করোনায় আক্রান্ত। আমরা আপনাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।
জানা গেছে, আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি রাজিক আল জলিল বিচারপতি মো: ইকবাল কবীরসহ ১২ জন বিচারপতি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
এ দিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদী করোনা আক্রান্ত বলে জানা গেছে। তবে তিনি ভালো আছেন বলে তার জুনিয়ররা জানিয়েছেন।
২৭ জুনের তথ্য অনুসারে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় দুইজনের থমৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ১০১ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৬৭ হাজার ২৭৪ জনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *