২২ অক্টোবর ২০২২, ৬ কার্তিক ১৪২৮, ২৫ রবিউল আওয়াল ১৪৪৪ হিজরি

দেশে এসির ব্যবহার দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। বেশিরভাগ এসিই ব্যবহার হচ্ছে ঢাকা শহরে। রাজধানীতে প্রতিবছর ২০ শতাংশ হারে এসির ব্যবহার বাড়ছে। এতে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি ঢাকা শহরের তাপমাত্রা বেড়ে পরিবেশের ক্ষতি করছে।

শুক্রবার (২১ অক্টোবর) ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) আয়োজিত নগর সংলাপের মূল প্রবন্ধে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। পরিকল্পনাবিদ মো. রেদওয়ানুর রহমানের ‘ভবনে এসি ব্যবহারজনিত বিদ্যুৎ চাহিদা ও নগরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণার সারাংশ উপস্থাপন করেন আইপিডি’র নির্বাহী পরিচালক এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান।

ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রয়োজনে এসির ব্যবহার বেড়েই চলেছে, যা পরিবেশের অনেক ক্ষতি করছে। অথচ কার্যকর নগর-পরিকল্পনা, ইমারত বিধিমালা এবং এসি ব্যবহারের সঠিক নীতিমালা থাকলে এসির ব্যবহার কমানোর পাশাপাশি বিদ্যুতের ওপর চাপ বহুলাংশে কমানো যেত। শুধু ঢাকা শহরেই প্রতি বছর এসির ব্যবহার ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে। বিগত কয়েক দশকে ঢাকার তাপমাত্রা বাড়ায় পরিবেশ ও মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, এসি ব্যবহারের সময় তাপমাত্রা চার-পাঁচ ডিগ্রি বাড়িয়ে ২০-৩০ ভাগ বিদ্যুৎ চাহিদা কমানো সম্ভব। অনুরূপভাবে সঠিক পরিকল্পনা ও নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে এসির ব্যবহার সীমিত করে সারা দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা বহুলাংশে কমানো সম্ভব। অন্যথায় শুধুমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনে নির্ভরতা বাড়িয়ে দেশের বিদ্যমান বিদ্যুৎ সংকট মোকাবিলা করা কঠিন হবে।

স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, এসির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারে বিদ্যুৎ সংকট প্রকটতর হচ্ছে। অথচ দেশে কৃষি কাজের জন্য বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। এসির নিরবচ্ছিন্ন ব্যবহার নিশ্চিত করতে তেলনির্ভর জেনারেটর চালানো হচ্ছে। যা শব্দ দূষণ-বায়ু দূষণের মাধ্যমে সামগ্রিক পরিবেশ দূষণের কারণ। এসি ব্যবহার সমাজে এক ধরনের বিদ্যুৎ বৈষম্য তৈরি করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সংলাপে আরও আলোচনায় অংশ নেয় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক স্থপতি শাহরিয়ার ইকবাল রাজ, এমইপি ডিজাইন স্টুডিও-এর চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মামুন ফেরদৌস প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *