প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে বা মনের খোরাক জোগাতে ঘর, বারান্দা বা ছাদে আমরা গাছ লাগাই। কিন্তু শুধু লাগালেই তো হবে না, গাছগুলোকে টিকিয়ে রাখতে চাই প্রয়োজনীয় যত্নআত্তি। ভালোবেসে হয়তো গাছে একসঙ্গে অনেক পানি দিলেন বা প্রতিদিনই পানি দিচ্ছেন, কিন্তু ফলাফল আসছে বিপরীত। গাছ তো সতেজ হচ্ছেই না, উল্টো ডালপালা শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন কেন হয়? ‘ইনডোর প্ল্যান্টের যত্নে সতর্ক ও সাবধানী হতে হবে। খুব বেশি পানি নয়, খুব বেশি আলোও নয়। আবার যেসব গাছ ছাদে লাগানো হয়, সেগুলোর পানিনিষ্কাশন ঠিকমতো হচ্ছে কি না, সেটা দেখাও জরুরি। আবার মৌসুমভেদে এর যত্নটাও হবে আলাদা—বর্ষায় এক রকম, শুষ্ক মৌসুমে আরেক রকম,’ বলছিলেন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক এ এফ এম জামাল উদ্দিন।
ইনডোর প্ল্যান্টগুলো খুব স্পর্শকাতর। বেশি পানি বা আলোতে মরে যায় জানিয়ে ব্র্যাক নার্সারির বিক্রেতা মোহাম্মদ কাজল আহমেদ বলেন, ‘ভালোভাবে বাঁচতে তাদের দরকার পরিমিত পানি ও আলো। সাধারণত সপ্তাহে তিনবার এসব গাছে পানি দিলে ভালো।
অন্দর উপযোগী গাছের মধ্যে পাতাবাহার অন্যতম। বিভিন্ন ধরনের পাতাবাহার রয়েছে—মানি প্ল্যান্ট, স্নেক প্ল্যান্ট, ড্রাসেনা, মনস্টেরা, এরিকা পাম, কলিয়াস, রাবার প্ল্যান্ট ইত্যাদি। আবার কিছু গাছ থেকে ফুল হয়—পিস লিলি, এনথুরিয়াম ইত্যাদি। অনেকে ঘরে অ্যালোভেরা রাখেন। এটি ঔষধি গাছ। ক্যাকটাসও অন্দরের শোভা বাড়ায়। অনেকে শখ করে জানালার গ্রিল বা বারান্দায় অর্কিড রাখেন। ছাদেও অর্কিড লাগানো হয়। কেউ কেউ ফার্ন–জাতীয় গাছ ঝুলিয়ে দেয় দেয়ালে। কেবল শোবার বা বসার ঘরে নয়, বাথরুমেও অনেকে গাছ রাখতে ভালোবাসেন। এ ক্ষেত্রে বেছে নেওয়া হয় আইভি লতা, স্পাইডার প্ল্যান্ট। অন্ধকার বা কম আলোতে এসব গাছের অসুবিধা হয় না। অন্ধকারেও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকে নির্দ্বিধায়।
তবে গাছভেদে যত্নটা একটু ভিন্ন। আর যত্ন মানেই তো পানি, সার দেওয়া; কতটুকু আলো লাগবে সেটার আন্দাজ করা। কিছু প্রচলিত অন্দরের গাছের যত্নের বিষয়ে জানিয়েছেন অধ্যাপক এ এফ এম জামাল উদ্দিন।